আটল্যান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণে আন্টার্কটিকা মহাদেশ। অজস্র পেঙ্গুইন এবং সীলের প্রজাতির পাশাপাশি সমুদ্রের বুকে ভেসে বেড়ায় অসংখ্য হিমশৈল। জাহাজিদের কাছে রীতিমতো বিভীষিকা এই হিমশৈলগুলি। তবে শুধুই মানুষ নয়, বরং এবার হিমশৈলের আতঙ্কের শিকার পেঙ্গুইন এবং সীলের প্রজাতিরাও। স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে, আন্টার্কটিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকার দিকে ভেসে আসছে বিরাট হিমশৈল এ-৬৮এ। আর কয়েকদিনের মধ্যেই সেটা আঘাত করতে পারে সাউথ জর্জিয়া দ্বীপে। তবে এই দুর্ঘটনা হলে বহু বিপন্ন প্রজাতিই একেবারে হারিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাউথ জর্জিয়া দ্বীপে বাস করে অন্তত ৩টি বিপন্ন প্রজাতির পেঙ্গুইন এবং অসংখ্য সীল। ফলে সেখানে কোনো বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের সবাই সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যেতে পারে। এমনকি তাদের শরীরের মধ্যে থাকা বিপুল কার্বনের ভাণ্ডার মিশতে পারে সমুদ্রে এবং বায়ুমণ্ডলে। স্যাটেলাইট প্রেরিত ছবি থেকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রথমে হিমশৈলটির আয়তন ছিল ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে দুটি বড়ো খণ্ড ভেঙে গেলেও এখনও তার আয়তন ৩৯ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি। আর ওজনেও কয়েক’শ বিলিয়ন মেট্রিকটন। দিনে প্রায় ২০ কিলোমিটার গতিবেগে সেটি এগিয়ে আসছে সাউথ জর্জিয়ার দিকে। ঠিক কবে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা অবশ্য এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
ইতিমধ্যে অবশ্য ইংল্যান্ডের বেশ কিছু বিশেষজ্ঞকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি বিশেষ দল। আর ইতিমধ্যে সেই দল অভিযানে বেরিয়ে পড়েছে। অভিযানের উদ্দেশ্য, যেকোনোভাবে হোক এই দুর্ঘটনা আটকানো। অবশ্য ঠিক কীভাবে সেটা সম্ভব, সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। এমন ঘটনা ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। আর তাই আপাতত প্রথম কাজ, হিমশৈলের গতিবিধির উপর নজর রাখা। বিশেষজ্ঞরা কি পারবেন এই দুর্ঘটনা আটকাতে? আপাতত সারা পৃথিবীর পরিবেশকর্মীদের চোখ সেদিকেই।
Powered by Froala Editor