সৌরজগতের বাইরেও গ্রহেও রয়েছে চৌম্বকক্ষেত্র, জানাল হাবল

প্রায়ই শোনা যায়, সূর্য থেকে ধেয়ে আসছে কোনো ভয়ঙ্কর সৌরঝড়। অথবা অন্য কোনো মহাজাগতিক বিস্ফোরণের ঢেউ। এতসবকিছুর প্রভাব কিন্তু সরাসরি এসে পৌঁছায় না পৃথিবীর উপর। এসবের মধ্যেও দিব্যি নিরাপদে বেঁচে রয়েছে জীবজগত। আর তার কারণ পৃথিবীকে ঘিরে রয়েছে এক চৌম্বকক্ষেত্র বা ম্যাগনেটোস্ফিয়ার। সৌরজগতের প্রায় সমস্ত গ্রহেরই নিজস্ব চৌম্বকক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু তার বাইরে? এই প্রথম সৌরজগতের বাইরের কোনো গ্রহের চৌম্বকক্ষেত্র শনাক্ত করতে পারলেন বিজ্ঞানীরা। নাসার স্পেস টেলিস্কোপ হাবলের (Hubble Space Telescope) সাহায্যে তা সম্ভব হয়েছে। আর এই গ্রহটি (Exoplanet) রয়েছে পৃথিবী থেকে ১২৩ আলোকবর্ষ দূরে।

এইচএটি-পি-১১বি (Hat-P-11b) গ্রহটি প্রথম শনাক্ত করা যায় ২০০৯ সালে। অবশ্য আর পাঁচটা এক্সোপ্ল্যানেটের থেকে তার যে আলাদা কোনো বৈশিষ্ট্য আছে, সেটা জানা গেল অতি সম্প্রতি। আয়তনে নেপচুনের চেয়ে সামান্য ছোটো এই গ্রহটি। আর ভর পৃথিবীর প্রায় ২৩.৪ গুণ। ৫১ পেগাসি নক্ষত্রের চারদিকে পাক খায় এই গ্রহটি। এমনই অসংখ্য গ্রহের সমস্ত তথ্য প্রতি মুহূর্তে সংগ্রহ করে চলেছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। সম্প্রতি বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীদের একটি দল সেই সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখছিলেন। আর দেখতে দেখতে হঠাৎই চোখ আটকে যায় এইচএটি-পি-১১বি গ্রহটির একটি ছবির উপর।

যখন নক্ষত্রটির সামনে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল গ্রহটি, তখন অতিবেগুনি রশ্মির সাহায্যে তার ছবি তুলেছিল হাবল। আর সেই ছবিতেই ধরা পড়ে গ্রহটির চৌম্বকক্ষেত্রের অস্তিত্ব। আজও পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। আর জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য চৌম্বকক্ষেত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ সমস্ত মহাজাগতিক কণার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে পারে এই চৌম্বকক্ষেত্রই। স্বাভাবিকভাবেই, এই গ্রহটিতে প্রাণের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। অবশ্য গবেষণাদলের অন্যতম সদস্য ইউনিভার্সিটি অফ আরিজোনার অধ্যাপক গ্লিডা ব্যালেস্টার জানিয়েছেন, এখানে উষ্ণতা প্রাণ ধারণের পক্ষে যথেষ্ট বেশি। যদিও যে পদ্ধতিতে এই গ্রহটির চৌম্বকক্ষেত্রের হদিশ পাওয়া গেল, সেই একই পদ্ধতিতে অন্য অনেক গ্রহের চৌম্বকক্ষেত্রের হদিশ পাওয়া যেতে পারে। এটাই এই গবেষণার সবচেয়ে বড়ো সাফল্য।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পৃথিবীর চেয়েও জলের পরিমাণ বেশি এই গ্রহে!