কথায় বলে, প্রয়োজন থেকেই আবিষ্কারের জন্ম। আর তাই মহামারী করোনার প্রেক্ষাপটে পৃথিবী জুড়ে নানা ধরনের উদ্ভাবনী সৃষ্টি নজরে আসছে। সেই তালিকাতেই যোগ হল একধরনের হসপিটাল বেড। কলম্বিয়ার বোগোটা শহরে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার সৌজন্যে এই নতুন আবিষ্কারের কথা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কার্ড বোর্ডের তৈরি এই হসপিটাল বেড একইসঙ্গে দুটি কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। প্রথম কাজটি তো অবশ্যই বিছানা হিসাবে। তবে রোগীর মৃত্যু হলে সেই বিছানাই ব্যবহার করা যেতে পারে কফিন হিসাবে। আর এর ফলে সংক্রমণের সম্ভবনাও কমবে।
এই অভিনব বিছানাটি তৈরি করেছে এবিসি ডিসপ্লে কোম্পানি। সম্পূর্ণ কার্ডবোর্ডের তৈরি কাঠামোর সঙ্গে লাগানো আছে কয়েকটি ধাতুর তৈরি স্লাইড। আর এগুলির সাহায্যেই রোগীর মৃত্যু হলে সেটি ভাঁজ করে কফিনে পরিণত করা যাবে। বর্তমান সময়ে সংক্রমণ এতই মারাত্মক চেহারা নিয়েছে যে একজন রোগীর বিছানা ভালোভাবে স্যানিটাইজ করার পরেও অন্য রোগীর জন্য ব্যবহার করতে সাহস পাচ্ছেন না ডাক্তাররা। আবার অন্যদিকে হাসপাতালের বিছানা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের জোগান যথেষ্ট কম। আবার মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কাঠের কফিনের জোগানও কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দিকের জোগান স্বাভাবিক রাখতে পারে এই আবিষ্কার। আর এর দামও যথেষ্ট কম। ভারতীয় মুদ্রায় ৬৬০০ টাকার আশেপাশে দাম একেকটি বিছানার।
করোনা পরিস্থিতিতে কার্ডবোর্ডের হসপিটাল বেডের ব্যবহার অবশ্য এই প্রথম নয়। কিছুদিন আগেই গুজরাটের আরিয়ান পেপার গ্রুপ কোম্পানি হাজার টাকারও কম দামে একধরনের কার্ডবোর্ড নির্মিত বিছানা বাজারে নিয়ে আসে। তবে এবিসি ডিসপ্লে কোম্পানির এই বিছানা তার দ্বৈত ভূমিকার জন্য আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কোম্পানির কর্ণধার রোডলফো গোমজ ইতিমধ্যে কলম্বিয়ার আমাজোনাস বিভাগের হাতে দশটি বিছানা তুলে দিয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এখন এই আবিষ্কার যদি ব্যবহারিক ক্ষেত্রে জোগান বলবৎ রাখতে সাহায্য করে, তবে তার থেকে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।