রাবড়ি-প্রেমীদের হাতছানি দিচ্ছে বাংলার 'রাবড়ি গ্রাম'

বাঙালি, অথচ মিষ্টি ভালবাসেন না, এমন কথা শুনলে লোকে খানিক হতভম্বের মতই তাকিয়ে থাকে। বাঙালি, বাংলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে বহু মিষ্টির নাম। আর সেটা যদি রাবড়ি হয়? তাহলে তো কথাই নেই! রাবড়ির খ্যাতি এমনই, যার জন্য আঁইয়া গ্রামের নাম আজ গোটা পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে। চিনতে পারলেন না? এই আঁইয়া গ্রামই মিষ্টিমহলে পরিচিত ‘রাবড়ি গ্রাম’ হিসেবে।

একটা আস্ত গ্রাম যেখানে একটা মিষ্টির নামে, তাহলে ভাবুন তার প্রভাব কতটা। বাস্তবিকই রাবড়ির জগতে বেতাজ বাদশা এই গ্রাম। হুগলীর চণ্ডীতলা ব্লকের এই গ্রামের প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই সার বেঁধে তৈরি হয় রাবড়ি। শুরু হয় সেই ভোর থেকেই। বড় বড় কড়ায় বসানো থাকে দুধ। চলে ফোটানোর কাজ। এমনকি, রাতের বেলাতেও থামে না কাজ। দুধ ফুটে ঘন হয়। পাখার হাওয়া লেগে, সেই ঘন দুধে মোটা সর পড়ে। এভাবেই চলতে থাকে রাবড়ি বানানোর কাজ। গ্রামের ৫০-৬০ টি ঘর একসঙ্গে জেগে থাকে এই মহাযজ্ঞের আয়োজনে।

গ্রামেরই এক বাসিন্দা মনসাচরণ বাগদীর হাত ধরে শুরু হয়েছিল পথ চলা। আজ আঁইয়া পরিচয় মুছে গিয়ে নতুন স্বীকৃতি পেয়েছে এই গ্রাম। রাবড়ি গ্রামের নাম মুখে মুখে। আর থাকবে নাই বা কেন? তাঁদের বানানো রাবড়ি যে ছড়িয়ে যাচ্ছে বাংলার নানা প্রান্তে। সেখানে আছে কলকাতাও। কলকাতার নামীদামি মিষ্টির দোকানেও পৌঁছে যায় রাবড়ি গ্রামের রাবড়ি। আর তারপর, সেখান থেকে সোজা আমাদের পেটে। নেপথ্যে কিন্তু এই গ্রামের মানুষরাই থাকেন। দিনরাত পরিশ্রম করে এই সম্মান তৈরি করেছেন তাঁরা। সেই দায়িত্ব থেকে কখনও সরে যান না তাঁরা। তাই আজও, এখনও, রসনার তৃপ্তিতে নিয়োজিত রাবড়ি গ্রাম। তাঁর খ্যাতি আজও বেঁচে আছে মর্যাদা নিয়ে।