সমুদ্রের নিচে নেমেছেন এক ডুবুরি। সঙ্গে করে অনেক কিছুই তুলে আনতে পারেন। মণি-মাণিক্য কিংবা কোনো গুপ্তধন। অথবা বহু প্রাচীন কোনো হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস। তবে সেই ইতিহাস যদি হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাৎসি বাহিনীর ইতিহাস, তাহলে একটা আলাদা আগ্রহ তো জন্মাবেই। আর সম্প্রতি জার্মানির গেলটিন উপসাগর থেকে উঠে এল সাধারণ কোনো যন্ত্র নয়, খোদ কিংবদন্তি এনিগমা কোডিং যন্ত্র।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তিকে প্রায় নাজেহাল করে দিয়েছিল হিটলারের এনিগমা কোডিং। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার কোড পালটে যায়। ফলে তথ্য বিশ্লেষণের কোনো সুযোগই পাওয়া যেত না। অবশেষে ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ অ্যালান টুরিং নিজস্ব অ্যালগরিদমের সাহায্যে সেই সংকেত বিশ্লেষণ করেন। বলা যায় অ্যালান টুরিং-ই বিশ্বযুদ্ধের অন্তিম সময় রচনা করে গিয়েছিলেন। যদিও যুদ্ধের শেষে হিটলারের নিজস্ব এনিগমা কোডিং যন্ত্রটি আর পাওয়া যায়নি। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশনের ডুবুরির দাবি, তিনিই খুঁজে পেয়েছেন সেই ঐতিহাসিক যন্ত্রটি। তবে এতদিন নোনা জলে পড়ে থেকে এখন আর তাতে কোনো কাজই হয় না।
যন্ত্রটি সমুদ্রের নিচ থেকে উদ্ধার করে তুলে দেওয়া হয়েছে জার্মানির পুরাতত্ত্ব বিভাগের হাতে। তাঁরাই এটির রক্ষণাবেক্ষণের ভার নিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রায় ৭০ বছরের ক্ষত পরিষ্কার করতে অন্তত ১ বছর সময় লেগেই যাবে। আর তারপর হয়তো কোনো সংগ্রহশালায় দেখা যাবে হিটলারের সেই বিখ্যাত যন্ত্রটি। একসময় যে সাংকেতিক ভাষা প্রতিপক্ষকে ঘোল খাইয়ে দিয়েছিল, আবারও সেই ভাষা প্রাণ ফিরে পেতে পারে।
Powered by Froala Editor