দিন ফুরোচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপের? জেনে নিন ‘সিগন্যাল’ এবং ‘টেলিগ্রাম’-এর ইতিহাস

/৬

মার্ক জুকারবার্গের কড়া বার্তা, হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রাইভেসি পলিসি না মানলে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে বহু বিতর্ক ও জল্পনায় রীতিমতো বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। আর ঠিক এই অবসরেই অন্যান্য মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলির জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। সবচেয়ে বেশি মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছেন ‘সিগন্যাল’ এবং ‘টেলিগ্রাম’ – এই দুটি অ্যাপ্লিকেশনের প্রতি। তবে দুটোর কোনোটাই নতুন নয়। জেনে নেওয়া যাক এদেরই বিশদ বিবরণ।

/৬

আমেরিকার ন্যশানাল সিকিউরিটি এজেন্সির সদস্যদের তৈরি সিগন্যাল ফাউন্ডেশন তৈরি হয় ২০১৩ সালে। অবশ্য তার আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল ‘টেক্সটসিকিওর’ এবং ‘রেডফোন’ নামের অ্যাপ্লিকেশনদুটি। ট্যুইটারের তরফ থেকে স্বীকৃতি মিলেছিল আগেই। তবে ২০১৩ সালেই সিগন্যাল নিয়ে আসে নতুন প্রযুক্তি। ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’। অর্থাৎ, মানুষের ব্যক্তিগত কথাবার্তার কোনো তথ্যই অন্য কোনো ব্যক্তি জানতে পারবেন না। এমনকি সংস্থার কর্তারাও না। ২০১৮ সালে পূর্ববর্তী দুই অ্যাপ্লিকেশনের মেলবন্ধনে আসে ‘সিগন্যাল’ অ্যাপ্লিকেশনটি।

/৬

২০১৩ সালেই তৈরি হয় ‘টেলিগ্রাম’ নামের অ্যাপ্লিকেশনটিও। এখানেও ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হয়। তবে সবচেয়ে অভিনব বিষয়টি হল, ব্যক্তিগত বার্তা এবং গ্রুপের পাশাপাশি এতে যোগ করা যায় নানা ধরণের চ্যানেলও। আছে ভিডিও কলের সুবিধাও। তবে গ্রুপ বা চ্যানেলের ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

/৬

সিগন্যাল-এর তৈরি ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ পদ্ধতিকেই বেছে নিয়েছিল ‘হোয়াটসঅ্যাপ’। এর পরেই তারও জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। কিন্তু হঠাৎ জুকারবার্গ জানিয়ে দিলেন, মাদার কোম্পানি ফেসবুকের সঙ্গে গ্রাহকদের সমস্ত তথ্য ভাগ করে নিতে হবে। আর এই নির্দেশকে ঘিরেই যত অশান্তি। তাহলে ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’-এর কথা কি আসলে ভাঁওতা?

/৬

এর মধ্যেই বেসরকারি মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা ‘স্পেস-এক্স’-এর কর্তা এলন মাস্কের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। হোয়াটসঅ্যাপের পরিবর্তে তিনি সরাসরি ওকালতি করেন ‘সিগন্যাল’-এর পক্ষে। এমন একজন জনপ্রিয় মানুষের সাহায্য সত্যিই কাজে আসে। বাণিজ্যিক অজ্ঞানতার কারণে যে পরিষেবা এতদিন খুব কম মানুষের কাছেই পৌঁছেছিল, এবার তারই জনপ্রিয়তা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো।

/৬

বিতর্কের প্রথম দুদিনেই সারা পৃথিবীতে ১ লক্ষ মানুষ ‘সিগন্যাল’-এর পরিষেবা গ্রহণ করেছেন। ‘টেলিগ্রাম’-এর গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে ২২ লক্ষ। অবশ্য ‘টেলিগ্রাম’ আগেই বেশ জনপ্রিয় ছিল। ২০২০ সালে তার মাসিক গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৪০ কোটির বেশি। তবে এই দুই অ্যাপ্লিকেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমছে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন গ্রাহকের সংখ্যা। আই-ফোন এবং অ্যান্ড্রয়েডে নতুন গ্রাহকের সংখ্যা বিগত সপ্তাহে পূর্ববর্তী সপ্তাহের তুলনায় কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ। অবশ্য তার পরেও এক সপ্তাহে ১ কোটি ৫ লক্ষ নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে। তবে একচেটিয়া ব্যবসা যে এবার যথেষ্ট সংকটের মধ্যে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

Powered by Froala Editor