ডাইনোসরের মাথার খুলি থেকে উদ্ধার ৭৫ মিলিয়ন বছরের পুরনো ডিএনএ

ডাইনোসর, অতিকায় এক সরীসৃপ। মানুষের আবির্ভাবের অনেক আগে এই পৃথিবীতে রাজত্ব করত তারা। প্রায় আড়াইশো মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে তাদের আগমন। সেইসময় তারাই সবথেকে শক্তিশালী প্রাণী। কিন্তু প্রকৃতির হঠাৎ পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে হারিয়ে গিয়েছে। তারপর এসেছে মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রাণীটিকে ঘিরে মানুষের উৎসাহের শেষ নেই। কিন্তু জানার অবকাশ বলতে কেবল কিছু জীবাশ্ম। এইসব জীবাশ্ম থেকে অনেক সূত্রই বিজ্ঞানীদের হাতে এসেছে। কিন্তু তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের হদিশ পেতে চলেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন
মরুভূমির মধ্যে তিমির জীবাশ্ম! আরেক বিস্ময় পিরামিডের দেশে

সম্প্রতি আমেরিকার মন্টানা প্রদেশে প্রাপ্ত একটি ডাইনোসরের জীবাশ্ম থেকে ডিএনএ অণুর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ন্যাশনাল সায়েন্স রিভিউ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত গবেষণার নথি। দীর্ঘদিন ধরেই মন্টানা প্রদেশের ডাইনোসরদের জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা চলছে। ৮০'র দশকে জ্যাক অর্নারের হাত ধরে গবেষণার শুরু। তাঁর নেতৃত্বেই কাজ করতেন আলিদা বেইলোল। ২০১০ সালেই তিনি দাবি করেন হ্যাড্রাসোর গোত্রের একটি তৃণভোজী ডাইনোসরের জীবাশ্মের মধ্যে তিনি সংরক্ষিত কোষ দেখতে পেয়েছেন। ঠান্ডায় জমে গিয়ে মাথার খুলির মধ্যে কোষগুলি থেকে যেতে পারে।

আরও পড়ুন
গুপ্ত সিঁড়ি পৌঁছে দিল সমাধিতে, ‘অভিশাপ’ সত্ত্বেও উদ্ধার তুতেনখামেনের মমি

সেদিন তাঁর কথায় সেভাবে কেউ পাত্তা দেননি। কিন্তু এক দশক ধরে নিরন্তর গবেষণা করে তিনি প্রমাণ করেছেন খুলির মধ্যে জমে থাকা ওই কোষগুলির বয়স প্রায় ৭৫ মিলিয়ন বছর। যা ওই জীবাশ্মের বয়সের সঙ্গে মিলেও যায়। আর কয়েকটি কোষের মধ্যে নিউক্লিয়াসের মতো গঠনও পাওয়া গেছে। এমনকি ডিএনএ রঞ্জকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ক্রোমোজোমের মতো কাঠামোগুলি। প্রকৃতপক্ষে ডাইনোসরের ডিএনএ আবিষ্কার হলে অনেক অজানা তথ্যই জানা যেতে পারে। তবে এতদিন ধরে ডিএনএর গঠনে কোনো পরিবর্তন ঘটেছে কিনা, সেবিষয়ে আরও গভীরে গবেষণার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বেইলোল।

আরও পড়ুন
পেট্রোলের বিকল্প সমুদ্র-শৈবাল, পরিবেশ দূষণ কমাতে নতুন জ্বালানির হদিশ

আপাতত এই গবেষণা প্রাথমিক স্তরেই রয়েছে। তবে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানা যেতে পারে। এমনটাই মনে করছেন রয়্যাল অন্টারিও মিউজিয়ামের জীবাশ্মবিদ ডেভিড ইভান্স। মানুষ ডাইনোসর দেখেনি। তবে দেখার আগ্রহ প্রচুর। মানুষের কল্পনায় ডাইনোসরকে কল্পনা করেছে নানাভাবে। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডাইনোসরের চরিত্র সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানা গেলে মানুষের কৌতূহল অনেকটাই মিটবে, আশা এমনটাই।