ইলিশ বলতে এক কথায় অজ্ঞান হয়ে যায় অনেক বাঙালি। স্বাদে, গন্ধে জিভে জল চলে আসার জোগাড়! কিন্তু এই ভরা শীতেও যে ইলিশ পাওয়া যাবে, সেটা বোধহয় কেউই ভাবতে পারেননি। এই ‘অসম্ভব’ ব্যাপারটাই ঘটেছে বাংলাদেশের বরিশালে। জীবনানন্দের জন্মস্থান এই জানুয়ারিতেই চেখে দেখছে ইলিশের স্বাদ।
ইলিশের এই ‘সেকেন্ড সিজন’ অনেকের কাছেই খুব অস্বাভাবিক লাগছে। গবেষকদের কাছে তো বটেই। ১৫ বছর পর শীতে ইলিশের মুখ দেখছেন তাঁরা। মূলত বর্ষাকালেই ইলিশের বাড়বাড়ন্ত দেখি আমরা। এপার-ওপার দুই বাংলাতেই তখন বাজারে ঢোকে জলের ‘রুপোলি শস্য’। এবার জানুয়ারিতেও বরিশালের রেড পোর্ট মৎস্য দফতরে দেখা গেল সেই দৃশ্য। মৎস্যজীবীদের বক্তব্য, এক একদিন ৫০০ মণ করেও মাছ উঠেছে। অসময় ইলিশ আসায় সবদিক থেকেই খুশি বরিশালবাসীরা। দামও খুব বেশি নয়। ভাল আকারের একটা ইলিশের দাম পড়ছে প্রায় ৬০০-৮০০ টাকার মধ্যে।
বাংলাদেশে ইলিশ ধরা নিয়ে বেশ কিছু কঠোর নিয়ম চালু রয়েছে। খোকা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি, ইলিশের প্রজননের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেটাও খেয়াল রাখছে সরকার। তার সুফলও মিলছে হাতেনাতে। ইলিশের পরিমাণ সেখানে বেড়েই চলেছে। তারই দ্বিতীয় ইনিংস এবার দেখতে চলেছে বরিশাল। তবে জলবায়ুর পরিবর্তনও এর জন্য দায়ী হতে পারে বলে মনে করছেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও গবেষকরা। তবে সে কারণ যাই হোক, এই অসময় চেটেপুটে ইলিশ খাওয়ার আনন্দ নিচ্ছেন ওপার বাংলার মানুষরা।
একদিকে বাংলাদেশে ইলিশের জোগান বাড়ছে, অন্যদিকে এপারে তার দাম বাড়ছে। সেই তুলনায় সংখ্যা সেরকম বাড়ছে না। বাংলাদেশ ইলিশ ধরা নিয়ে আইন করেছে, এবং তার কঠোর প্রয়োগ করছে। পশ্চিমবঙ্গেও আইন আছে, সেটা কতটা প্রয়োগ হয়, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। বর্ষায় বাজারে গেলে আজও মেলে ছোটো ইলিশ, যা ধরা বেআইনি। ইলিশের সুস্থ প্রজনন চক্রের জন্য ওপার বাংলায় তার সংখ্যা বাড়ছে। আর এখানে শুধু দামই বাড়ছে, বাকি অবস্থার কি খুব পরিবর্তন হয়েছে? আপনারা কী বলেন?