প্রকাশিত হল এই বছরের বাঘসুমারির পরিসংখ্যান। চলতি মরশুমে বাঘের সংখ্যা রেকর্ড বৃদ্ধি পেল সুন্দরবনে। এক ধাক্কায় বাড়ল ৮টি বাঘ। এই গণনার তথ্য ঘিরেই যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
গত বছরে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৮৮। এ বছর সেটা সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৬-এ। ২০১৬-১৭-তে বাঘের সংখ্যা বেড়েছিল ৭টি। সেই রেকর্ড ভেঙে গেল এই বছর। এই ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, সুন্দরবন স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ আবাসস্থল হয়ে উঠছে বাঘের। কাজেই পরের বছর আরও বাড়বে বাঘের সংখ্যা, পেরিয়ে যাবে একশোর মাইলস্টোন। এ বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী পশ্চিমবঙ্গ বনমন্ত্রক।
বছর দুয়েক আগে পর্যন্তও পায়ের ছাপ দেখেই গণনা হত বাঘের সংখ্যা। তাতে অনেক সময়ই ভুল পরিসংখ্যানের সম্ভাবনা থাকত। এ-বছর বাঘ গণনার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত প্রযুক্তি। নদী ও খাঁড়িগুলিসহ জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় পাতা হয়েছিল ক্যামেরার ফাঁদ। বসানো হয়েছিল প্রতি দুই বর্গকিলোমিটারে একটি করে ক্যামেরা। ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত ছবির বিদেশি প্রযুক্তিতে বিশ্লেষণ করা হয় দেরাদুনে। ফলে নির্ভুল হয়েছে এই গণনা।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসাবে বন দফতরের কৃতিত্ব অনস্বীকার্য। শেষ দু’বছরে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য কর্মীদের প্রদান করা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। চোরাশিকারের হাত থেকে বাঘ বাঁচাতে নেওয়া হয়েছিল গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জঙ্গলের চারিদিকে যেমন লাগানো হয়েছিল নেট ফেন্সিং, বাড়ানো হয়েছিল ই-পেট্রোলিংও। ফলে কমেছে বাঘের মৃত্যুর হার।
পৃথিবীর সব থেকে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য, সুন্দরবনেই একমাত্র দেখা মেলে বাঘের। সুন্দরবনের অধিকাংশ অঞ্চলই বাংলাদেশের অন্তর্গত। পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে মাত্র ৪২০০ কিলোমিটার ম্যানগ্রোভ বনভূমি। তবে শেষ কয়েকবছরে কমেছে অরণ্যের ক্ষেত্রফল। গাছ কাটা এবং মাটি ক্ষয়ের ফলে হ্রাস পেয়েছে বনভূমির একাংশ। বাঘের সংখ্যা বাড়াতে গেলে নজর রাখতে হবে সেদিকেও, একথা স্বীকার করেন বন দফতরের আধিকারিকরা।