বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিঃশ্বাস ফেলছে ঘাড়ের উপর। সেইসঙ্গে বাড়ছে কার্বন নির্গমনও। পরিস্থিতি ঠাকানোর একমাত্র উপায়ই এখন সবুজায়ন। তবে তার একেবারে উল্টো ছবিই যেন প্রকট হয়ে রয়েছে ব্রাজিলে। গত সোমবারের প্রকাশিত সরকারি নথিই জানাচ্ছে আমাজনে গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বননিধন হয়েছে ২০১৯-২০ সালে।
ব্রাজিলের মহাকাশ সংস্থা প্রোডেসের স্যাটালাইট ইমেজিংয়ের মাধ্যমেই এই তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে বলে উল্লেখিত হয় রিপোর্টে। সেই পরিসংখ্যানই জানাচ্ছে চলতি আগস্ট পর্যন্ত বিগত ১২ মাসে ১১০৮৮ বর্গ কিলোমিটার অরণ্য নিধন চলেছে ব্রাজিলে। যা গত বছরের তুলনায় ৯.৫ শতাংশ বেশি। যার আয়তন গোটা জামাইকা দেশের থেকেও বেশি।
গত ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে অরণ্যসম্পদ ও বনাঞ্চলের দায়িত্বভার নিয়েছিলেন ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জের বলসোনারো। আর তারপর থেকেই অবাধে বেড়েছে বৃক্ষচ্ছেদন। উঠে আসছে এই অভিযোগই। সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যেই খনন এবং কৃষিকার্যের জন্য প্রথম থেকেই ছাড়পত্র দিয়েছিলেন বলসোনারো। যা একদিকে যেমন বননিধনের পাশাপাশি দাবানলের কারণ হয়ে দাঁরিয়েছিল। তেমনই তা প্রভাবিত করেছিল বেআইনি বৃক্ষচ্ছেদনকে।
বনভূমির ধ্বংসের ব্যাপারে সার্বিকভাবেই দায়সারা মনোভাব দেখা গিয়েছিল তাঁর মধ্যে। জলবায়ু পরিবর্তন যে কোনো সমস্যাই নয়, এমন কথাও শোনা গিয়েছিল তাঁর থেকে। পারতপক্ষে বাস্তব ঘটনা যার পুরোপুরি উল্টো। পৃথিবীর বৃহত্তম রেইনফরেস্ট আমাজনের ৬০ শতাংশই ব্রাজিলের অন্তর্গত। আমাজনকে সুরক্ষা না করতে পারলে যে কোনোভাবেই আটকানো যাবে না উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। সতর্ক করা হয়েছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনকারী দেশের তালিকায় প্রথমেই থাকবে ব্রাজিলের নাম।
কিন্তু এই রিপোর্টের পরেও কি বিন্দুমাত্র টনক নড়ল ব্রাজিল প্রধানের? সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলসোনারো জানান জলবায়ুর পরিবর্তন আটকাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমেই মোকাবিলা করবে ব্রাজিল। তবে কীভাবে, তা জানা নেই কারোর। অবশ্য বন-সংরক্ষণের জন্য ব্রাজিলে রয়েছে একাধিক আইন। তবে নিষ্ক্রিয় দশা থেকে বেরিয়ে এসে সেসব কবে কার্যকরী হবে, তা জানা নেই কারোর...
Powered by Froala Editor