বাংলার সারা অঞ্চল জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে খুচরো ইতিহাস। ছড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন সংস্কৃতির নানান মূল্যবান সম্পদ। ঐতিহ্যবাহী নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঘরানার আচার-সংস্কৃতি, এবং কুটির শিল্প। স্রেফ অবহেলাতেই লুপ্তপ্রায় সেই সমস্ত সংস্কৃতির দণ্ডায়মান বাস্তব দলিল। এবার সেই ঐতিহ্যের সংরক্ষণের জন্যই সরকার বদল আনতে চলেছে রাজ্যের ২০০১-সালের হেরিটেজ আইনে।
বাংলার বিভিন্ন প্রাচীন মন্দির, মসজিদ, ঐতিহ্যবাহী বাড়ি এবং গঙ্গার বিভিন্ন প্রাচীন ঘাটের সংরক্ষণ করার কথা জানিয়েছে সরকার। ইমারতগুলির সঙ্গেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তাঁত শিল্প, টেরাকোটার কাজ, গয়না শিল্প, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলিক ভাষার গান তথা লোকশিল্পকে। বাদ যায়নি সরপুরিয়া, ল্যাঙচা কিংবা বর্ধমানে মিহিদানার মত বিখ্যাত মিষ্টি ও বাংলার বড়ি, পাঁপড় প্রভৃতি। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখেই তার পুরনো রূপ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালানো হবে বলে খবর সূত্রের। তবে খেয়াল রাখা হবে তাতে যেন কোনোভাবে খর্ব না হয় ঐতিহাসিক গুরুত্ব।
নোবেলজয়ী জার্মার সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস বাংলায় এসে বহু আগেই অনুরোধ জানিয়েছিলেন কলকাতার ঐতিহ্যের সংরক্ষণ করার জন্য। জার্মান সরকারের থেকে এসেছিল সংরক্ষণে সহায়তা করার প্রস্তাবও। তবে বাম-সরকারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উদ্যোগ নিলেও তার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে ওঠেনি তখন। তার প্রায় দেড় দশক পরে আদা-জল খেয়ে ঐতিহ্য সংরক্ষণে ব্রতী হল রাজ্য সরকার এবং হেরিটেজ কমিশন।
ইতিমধ্যেই সংরক্ষণ আইনে সংশোধন আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। সেই খসড়া তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেই বিল পেশ করা হবে আগামী বিধানসভার অধিবেশনেই। পাশাপাশিই রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী নির্মাণ এবং শিল্প-সংস্কৃতির চিহ্নিতকরণ ও তালিকা প্রস্তুতির জন্য গঠন করা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটিও। তলিয়ে দেখা হচ্ছে বাংলার খুচরো ইতিহাস। আইন সংশোধনের কাজ শেষ হলেই শুরু হবে পরিকল্পনার বাস্তবায়নের কর্মসূচি...
আরও পড়ুন
চট্টগ্রাম থেকে সোজা ফ্রান্স; ক্রমে ফরাসি বিপ্লবের নেতা হয়ে উঠলেন বাংলার যুবক
Powered by Froala Editor