কিংবদন্তি বৈজ্ঞানিক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মস্তিস্কের অংশ যে সংরক্ষিত আছে, সেটা কমবেশি আমরা সবাই জানি। তবে কেবলমাত্র আইনস্টাইনই নয়, আরও একজনের মস্তিস্ক, থুড়ি পুরো মাথাটাই গবেষণার জন্য সংরক্ষিত আছে। ঘটনাচক্রে, তিনি একজন সিরিয়াল কিলার! নাম, দিয়েগো আলভেজ।
দিয়েগো আলভেজের সিরিয়াল কিলার হওয়া, এবং তার পরবর্তী কাহিনিটা কোনো সিনেমার স্ক্রিপ্টের থেকে কম নয়। ১৮১০ সালে স্পেনে জন্ম নেওয়া দিয়েগো মাত্র ১৯ বছর বয়সেই ঘরবাড়ি ছেড়ে পর্তুগালে চলে আসেন। উপলক্ষ্য, খাবার জোটানোর মতো কিছু কাজ। কিন্তু বেশ কয়েক বছর প্রবল চেষ্টা করেও কোনওরকম কাজ পাননি। হতাশা গ্রাস করে তাঁকে। আস্তে আস্তে মানসিক সমস্যা গিলে ফেলে তাঁকে। এই সময়ই নেশার জগতে প্রবেশ করেন দিয়েগো। আর এই জগতই জন্ম দেয় অন্যতম কুখ্যাত একজন সিরিয়াল কিলারের।
প্রথমে সামান্য চুরি, রাহাজানি দিয়ে অপরাধ জীবন শুরু করেছিলেন দিয়েগো আলভেজ। তারপর হয়ে ওঠেন নৃশংস খুনি। ১৮৩৬ সাল থেকে চার বছরে লিসবনে ৭০ জন কৃষককে হত্যা করেন তিনি। খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে ভাসিয়ে দিতেন নদীতে। প্রথম প্রথম পুলিশও পাত্তা দেয়নি ঘটনাকে। কিন্তু খুনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তদন্তে নামে তারা। আর সেই খবর পেয়ে সাময়িক গা ঢাকা দেন দিয়েগো। তিন বছর পর আবার শুরু করেন তাঁর হত্যালীলা। শুধু তাই নয়, এই সিরিয়াল কিলার নিজের একটা গ্যাংও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এক ডাক্তারকে পরিবারসহ খুন করার ঘটনায় ধরা পড়ে যান দিয়েগো। বিচারে মৃত্যুদণ্ড হয় তাঁর। কিন্তু এতদিন ধরে এত মানুষকে কীভাবে এতটা ঠান্ডা মাথায় খুন করতে পারতেন তিনি? মেডিক্যাল পড়ুয়াদের কাছে সেটা গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আর তাই, মৃত্যুদণ্ডের পর দিয়েগোর মাথা কেটে সংরক্ষণ করা হয় লিসবনে। সেই গবেষণা ফলপ্রসূ হয়নি। দিয়েগো আলভেজের নিষ্ঠুরতার রহস্য ধরতে পারেননি গবেষকরা। কিন্তু তাঁর কাটা মাথাটি থেকে গেছে আজও। লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে সেটি।