হরপ্পা সভ্যতার পতনের কারণগুলির মধ্যে অন্যতম কারণ হল আর্য আক্রমণ। হুইলার, স্টুয়ার্ট পিগট, গর্ডন চাইল্ড প্রমুখ ঐতিহাসিকএকথাই মনে করেন। এছাড়াও আর্যদের আগমনকাল ও হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসের সময় (আনুমানিক ১৫০০-১৪০০ খ্রি: পূর্বাব্দ) অদ্ভুত ভাবেই মিলে যায়। হরপ্পায় প্রাপ্ত ইতস্তত বিক্ষিপ্ত মৃতদেহগুলির মাথার খুলিতে আঘাতের চিহ্ন প্রমাণ করে আকস্মিক আক্রমণের ফলেই নগরবাসী নিহত হয়।
কিন্তু প্রচলিত এই ধারণা নিয়েই উঠল নতুন প্রশ্ন। জিনগত গবেষণায় জানা গেছে, হরপ্পা সভ্যতার দেশের দিকে আর্য আক্রমণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গবেষকদের ধারণা, বৈদিক সভ্যতার সৃষ্টি হরপ্পা সভ্যতা থেকেই। বৈদিক যুগের যে সরস্বতী নদীর উল্লেখ আছে তার কিছু অঞ্চলে হরপ্পা সভ্যতার বিকাশ হয়ছিল। হরিয়ানার হিসারের কাছে সরস্বতী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত রাখিগড়হি এলাকায় পাওয়া কঙ্কালের জিন পরীক্ষা করে তাতে মধ্য এশিয়ার জনগোষ্ঠীর কোনো জিন পাওয়া যায়নি। অনেক ঐতিহাসিক এই তথ্যের বিরোধিতা করে বলেছেন, হরপ্পা সভ্যতার মানুষেরা এদেশেরই ছিল। তাই আর্য আক্রমণের সত্যতা জানতে হলে হরপ্পা সভ্যতার পরবর্তী সময়ে বাইরের কোনো জিনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে কিনা তা দেখতে হবে।
বর্তমান ভারতীয়দের জিনে হরপ্পার জিনের অস্তিত্ব রয়েছে। রয়েছে কুষাণ, শক, হুণ গোষ্ঠীরও। কিন্তু মধ্য এশিয়ার জনগোষ্ঠীর জিন পাওয়া যায়নি। যদিও একটি মাত্র প্রমাণের ভিত্তিতে ইতিহাস পাল্টাতে নারাজ ঐতিহাসিকরা। গবেষণা করে হয়তো উঠে আসবে নতুন কোনো তথ্য।