দেশবাসী 'আচ্ছে দিন' নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হলেও এটা মেনে নিতে কারোর অসুবিধে নেই যে বর্তমান সময়ে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা কার্যত তলানিতে। গোঁদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিল কিছুদিন আগেই প্রকাশিত গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স রিপোর্ট। যেখানে ১১৭টি দেশের মধ্যে ভারত ১০২ তম স্থানে। ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়তে গিয়ে ভারতের একটা বৃহৎ শিশু প্রজন্ম অপুষ্টির শিকার। ঠিক এই দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ফিডিং ইন্ডিয়া নামক এনজিও সংস্থা। তারা একপ্রকার রেফ্রিজেরটার ইনস্টল করার উদ্যোগ নিয়েছে যেখানে দরিদ্রদের জন্য খাবার সঞ্চিত থাকবে। তারা সেই রেফ্রিজারেটরের নাম রেখেছে 'হ্যাপি ফ্রিজ'।
কোন অঞ্চলের অধিবাসীরা এই ফ্রিজে তাদের উদ্বৃত্ত খাবারের একটা অংশ রেখে আসতে পারেন গরিব ক্ষুধার্তদের জন্য অনুদান হিসেবে। ফিডিং ইন্ডিয়ার ভুবনেশ্বরের প্রধান শ্রী শ্যাম সিংহ সেই শহরের নাগরিকদের কাছে অন্তত একজন মানুষের খাবার যেমন দুটো চাপাটি ও এক বাটি ডালের জন্য আবেদন করেছেন এই উদ্দ্যেশ্যে। স্বেচ্ছাসেবীদেরও রেফ্রিজারেটরের খাবার ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
২০১৪ সালে দুই সংস্থা, আইরিশ এইড এজেন্সি কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ও জার্মান অর্গানাইজেশন ওয়েল্ট হাঙ্গার লাইফ মিলে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স তৈরি করে, যেখানে ৭৭টি দেশের মধ্যে ৫৫তম স্থান ছিল ভারতের। তারা মূলত চারটি বিষয়কে মাথায় রেখে গণনা করে; শিশুমৃত্যু, পুষ্টিহীনতা যার মধ্যে অন্যতম। সরকার কতটা উদ্যোগী হবে জানা নেই। তবে অপুষ্টিতে ভোগা একটি দেশে ফিডিং ইন্ডিয়ার মতো আরো অনেকে যদি এমন উদ্যোগে সামিল হয় এবং মানুষের মানসিকতার বদল ঘটে, তবে হয়তো এই ক্ষুধার মানচিত্র খানিক হলেও বদলাবে।