আজকাল খুব কম বয়স থেকেই চোখে চশমা পড়তে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। একসময় মনে করা হত, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষীণ হয়ে আসা দৃষ্টিশক্তির কারণেই চশমা পড়তে হয়। কিন্তু এখন কিশোর কিশোরীদের মধ্যে কাছের জিনিস দেখতে সমস্যা হয় না। সমস্যা হত দূরের জিনিস দেখতে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই রোগকে বলা হয় মায়োপিয়া। আর সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, এই রোগের মূল ছড়িয়ে গিয়েছে মানুষের জিনের মধ্যে। আর এই পরিবর্তন এত দ্রুত ঘটে চলেছে যে ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হতে চলেছেন।
মায়োপিয়ায় সঙ্গে ফুসফুসের এবং শ্বাসযন্ত্রের যোগাযোগ আছে, এমন একটা ধারণা চিকিৎসকদের মধ্যে আগে থেকেই ছিল। আর তাই ক্রমশ বাতাসে কার্বনের পরিমাণ বাড়তে থাকাই দৃষ্টিসীমাবদ্ধতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মিশিগান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জিঞ্জি জং-এর বক্তব্য, এই বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই বদলাচ্ছে মানুষের জিন। আর দৃষ্টিশক্তির সঙ্গে জড়িত জিনগুলির মধ্যেও দেখা গিয়েছে মিউটেশনের প্রভাব। যদিও শ্বাসযন্ত্রের মিউটেশনের আগেই কেন দৃষ্টিশক্তির মিউটেশন ঘটছে, সেটা এখনও তাঁর কাছে এক বিস্ময়।
অধ্যাপক জং পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছেন, ১৯৪০ সালে যেখানে ২৪ শতাংশের কিছু বেশি মানুষের মধ্যে মায়োপিয়ার উপসর্গ দেখা যেত, এখন সেই সংখ্যাটা ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর তাঁদের বেশিরভাগকেই বাধ্যতামূলকভাবে চশমা ব্যবহার করতে হয়। ৪০ বছরের পরে মায়োপিয়া আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও বেড়েছে এই কয়েক দশকে। আর এই সমস্ত পরিবর্তনের প্রভাব দেখা গিয়েছে মানুষের জিনোমে। এভাবে এগোতে থাকলে জামা-কাপড়ের মতোই চশমাও একটি পোশাকে পরিণত হবে। আর সেই দিন বেশি দূরে নয়। ২০৫০ সালের মধ্যেই বিশ্বের প্রতি ২ জন মানুষের মধ্যে একজনের চোখে চশমা দেখা যাবে বলে মনে করছেন অধ্যাপক জং।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
অবহেলায় দুদিন ঝুলে ছিল ডাকবাক্সেই, ব্রিটেনে উদ্ধার মহাত্মা গান্ধীর ব্যবহৃত চশমা