গুরুদ্বারায় নামাজ পাঠ, সম্প্রীতির নজির গড়তে চলেছে গুরগাঁও

বিগত বেশ কয়েকমাস ধরেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল গুরগাঁও (Gurgaon) শহরে। একাধিক সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে শহরের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা নিরাপদে নামাজ পড়ার জায়গা খুঁজছেন। তাঁদের দিকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল গুরগাঁও সদরবাজার এলাকার গুরুদ্বারা অ্যাসোসিয়েশন (Gurudwara Association)। আগামীকাল থেকেই সেখানে নামাজ পড়া শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন সংস্থার সভাপতি শার্দিল সিং সিধু।

গুরগাঁও শহরে মোট ৩৫টি জায়গায় নামাজ পড়তেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা। এতদিন তা নিয়ে কোনো অশান্তি দানা বাঁধেনি। হঠাৎই কয়েকমাস আগে সংযুক্ত হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির সদস্যরা প্রকাশ্য জায়গায় নামাজ পড়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়। এর মধ্যেই কয়েকজন হিন্দুত্ববাদী নেতার উদ্যোগে একটি গোবর্ধন পূজার আয়োজনও করা হয়। শুক্রবারের সেই পুজোর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল এমন একটি জায়গা, যেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা নামাজ পড়তে যান। এখান থেকেই অশান্তির সূত্রপাত হয়। অবশেষে শহর প্রশাসনের তরফ থেকেও ৩৫টির মধ্যে ৮টি জায়গায় নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে নামাজ পড়ার জায়গা খুঁজে পাওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। বাকি জায়গাগুলিতেও যে কোনো সময়ে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

এই পরিস্থিতিতে সদরবাজার গুরুদ্বারা অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছেন, গুরুর স্থানে জাতি-ধর্মের বিভাজন কোনোদিনই ছিল না। তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা চাইলে নির্ভয়ে সেখানে নামাজ পাঠ করতে পারেন। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টিও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরাই দেখবেন। পাশাপাশি শার্দিল সিং সিধু জানিয়েছেন, প্রকাশ্য স্থানে যে কোনো মানুষ তাঁর ধর্মাচরণ করতে পারেন। এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ধর্মাচরণের ওপর আঘাত না করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সমস্ত মানুষদের। বর্তমানের এই সাম্প্রদায়িক হানাহানির যুগে সত্যিই এক অন্যরকম নজির তৈরি করলেন গুরগাঁও-এর শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা। অবশ্য মিলেমিশে থাকার এই সংস্কৃতিই তো আমাদের দেশের ঐতিহ্য।

Powered by Froala Editor

Latest News See More