হাওড়া-কাটোয়া লাইনের একটি স্টেশন গুপ্তিপাড়া। ইতিহাসে মোড়া একটা জায়গা। এইখানেই জন্মেছিলেন কবিয়াল ভোলা ময়রা। তাঁর কোনও চিহ্ন এখন নেই আর। তবে রয়ে গেছে গুপ্তিপাড়ার মিষ্টির ঐতিহ্য। রয়ে গেছে বিখ্যাত গুপো মিষ্টি। বাংলার প্রথম ব্র্যান্ডেড মিষ্টি।
গুপ্তিপাড়ার সঙ্গে মিষ্টির ঐতিহ্য বরাবরের। দাবি করা হয়, এখানেই নাকি প্রথম মাখা সন্দেশের আবিষ্কার হয়েছিল। আর এই মাখা সন্দেশ থেকেই তৈরি হয় গুপো সন্দেশ। মূলত দুটি সন্দেশ জুড়ে এটি তৈরি হয়। বলা যেতে পারে, জোড়া সন্দেশ। মাখা সন্দেশের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে, তারপর ভালো করে আকার দিয়ে তৈরি করা হয় এটি। গুড়ের বন্দোবস্ত অবশ্য থাকে শীতকালে। বাকি সময়টা তার বদলে চিনি। আর তার জোরেই বাংলার মিষ্টির জগতে প্রথম গ্র্যান্ড এন্ট্রি হয় গুপো সন্দেশের।
সন্দেশের নামটিও বড় সরেস। বলা হয়, গুপ্তিপাড়ার নাম থেকেই এই মিষ্টিটির নাম হয়। হাজার হোক, এলাকার বিখ্যাত মিষ্টি বলে কথা। গুপো কখনও কখনও পরিবর্তিত হয় গুপোতেও। উনবিংশ শতকে তৈরি এই মিষ্টি একটা সময় গোটা কলকাতায় ছড়িয়ে পড়েছিল। নিয়মিত গুপ্তিপাড়া থেকে সরবরাহ করা হত এটি। ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে এটি। তৈরি হয়েছে কত কাহিনি, কত মিথ।
আজও গুপ্তিপাড়ার কিছু দোকানে তৈরি হয় এই মিষ্টি। কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলেও সন্ধান মেলে এর। কিন্তু সংখ্যায় অনেক কমে গেছে। চাহিদা কমে এসেছে। ফলে টান পড়েছে জোগানে। বাংলার প্রথম ভিআইপি মিষ্টির হাঁড়িতেও টান পড়েছে। এখন ঐতিহ্যকে আঁকড়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন কারিগররা। কতটা কী হয়, সেটাই দেখার।
ছবি - সংগৃহীত