ফাঁকা রাস্তায় লাইন দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মানুষ। হাতে পোঁটলা, কাঁধে ব্যাগ; অন্যহাতে হয়ত সংসারের সদ্যোজাত সদস্যটি। সবই আছে, কিন্তু কেমন অগোছালো হয়ে আসছে সব। ভবিষ্যৎ, ভাতের চিন্তা, সন্তানদের বড়ো করার ভাবনার ওপর নেমে আসছে কালো ছায়া। গোটা ভারত জুড়ে হেঁটে যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকের দল। তাঁদের সেই দুরবস্থা নজর এড়াল না একজনের। নিজের সৃষ্টি, শব্দ ও কবিতার মাধ্যমেই সেই অবস্থাকে তুলে ধরলেন গুলজার।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওর মাধ্যমে তাঁর এই লেখা উঠে এল আমাদের সামনে। স্ক্রিনের একদিকে নিজের খাতা খুলে পাঠ করছেন স্বয়ং গুলজার; অন্যদিকে ফুটে উঠছে লকডাউন ভারতের একের পর এক দুরবস্থার ছবি। পরিযায়ী শ্রমিকদের হাহাকার, অভাব, দীর্ঘ পথ হেঁটে চলা— সবটাই উঠে আসছে সেখানে। একইসঙ্গে উঠে আসছে গুলজারের জলদগম্ভীর কণ্ঠেও। যতই দুঃখ আসুক, ঝড় আসুক; দিনের শেষে ওই মানুষগুলোর কাছে একটা কাজ ছিল। কারোর কারখানা, কারোর সরকারি প্রকল্পের সামান্য কাজ, কারোর আবার নিজের জমি। দারিদ্র্য কতটা মিটত জানা নেই, কিন্তু কিছু তো সম্বল ছিল। ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে অল্প অল্প স্বপ্ন দেখা চলত।
আজ সেসবও হারিয়ে গেছে। মানুষরা এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে উদ্বৃত্তের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। লকডাউন, করোনা— এইসব কিছুর বাইরে তাঁদের চিন্তা সংসারের। আয় হবে তো আর? কাজ আসবে তো? টাকা? সন্তানদের দু’মুঠো খাওয়ানো যাবে তো? কেউ কেউ মারাও যাচ্ছেন; কেউ হয়ত হারিয়েই যাবেন। এই সবটাই উঠে এসেছে গুলজারের লেখায়। সারসত্য হয়ে উঠে এল একটিই লাইন- ‘মরেঙ্গে তো ওহি জাকর যহা পর জিন্দেগি হ্যায়’।