নিজে হাতে সোলার সাইকেল তৈরি করে চমক গুজরাটের স্কুলপড়ুয়ার

দেখতে সাধারণ একটা বাইসাইকেলের মতোই। তবে এই সাইকেল চালাতে প্যাডেল ঘোরাতে হয় না। এমনকি প্রয়োজন নেই কোনো জ্বালানির বা নিয়মিত চার্জ দেওয়ার। কারণ তার সামনে ও পিছনে রয়েছে দুটি সোলার প্যানেল (Solar Panel)। সূর্যের আলো থেকেই সাইকেল চালানোর শক্তি পাওয়া যায়। আর এই সাইকেলে চড়েই প্রতিদিন স্কুলে যায়, এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায় গুজরাটের (Gujrat) ভাদোদরার কিশোর নীল শাহ। এই সাইকেল তার নিজেরই তৈরি। জেনিথ হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া নীলের এই কাণ্ডের প্রশংসা জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে পরিচিত সকলেই।

ছোটো থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ নীলের। বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নানা মডেল তৈরি করতে ভালোবাসে সে। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় একবার প্লাস্টিকের বোতল এবং কার্ডবোর্ড দিয়ে একটি হেলিকপ্টার বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সে। তখনই স্কুলের শিক্ষক সন্তোষ কৌশিকের দৃষ্টি পড়ে তার উপর। এরপর সেই শিক্ষকের হাত ধরেই আরও বেশি করে বুঝেছে বিজ্ঞানকে। আরও নানাভাবে তাকে কাজে লাগানোর কথা ভেবেছে। যা আর শুধুই একটা মডেল হয়ে থাকবে না, বরং নীল তার নিজের জীবনেও কাজে লাগাতে পারবে সেইসব জিনিসকে। এভাবেই হঠাৎ একদিন তার মাথায় আসে সৌরবিদ্যুৎচালিত সাইকেলের কথা। পরিবেশদূষণ কমাতে সৌরশক্তির ব্যবহারের কথা সে ভেবেছিল আগেই।

বাবাকে এই কথা জানাতে তিনিও উৎসাহ দেন ছেলেকে। প্রথমে মাত্র ৩০০ টাকা দিয়ে একটি ভাঙাচোরা সাইকেল কিনে এনে দেন। সেই সাইকেলের সঙ্গে ব্যাটারি, মোটর ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি জুড়ে নীল দেখায়, তা দিব্যি চলছে। কিন্তু ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য চাই সোলার প্যানেল। শেষ পর্যন্ত তাও কিনে আনা হয়। এখানে অনেকটাই খরচ পড়ে যায়। সব মিলিয়ে একটি সাইকেল তৈরিতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে নীলের। অবশ্য এতে যাতায়াতের তো আর কোনো খরচ নেই। ৮ ঘণ্টা সূর্যের আলো পেলে অনায়াসে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে এই সাইকেল। ব্যাটারির ক্যাপাসিটি বাড়ালে আরও দূরে যাওয়া যাবে। ফলে তার কাজে অন্যরাও যেমন অবাক, তেমনই নীল নিজেও বেশ খুশি। এবার অবশ্য পড়াশোনার দিকেই মন দিতে চায় সে। সামনেই বোর্ড পরীক্ষা। পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে গেলে যে আরও অনেকটা পথ যেতে হবে তাকে।

Powered by Froala Editor

Latest News See More