সব ঠিকঠাকই চলছিল। বাকি পাঁচজনের মতো স্কুলে যাওয়া, খেলা - সবকিছু। এক দুর্ঘটনা সেই সবকিছু কেড়ে নিল। জীবনের বিনিময়ে চলে গেল দুটো হাত আর একটি পা। থেমে যেতে পারত সব। পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যেত চারিদিক। কিন্তু গুজরাটের শিবম সোলাঙ্কি হার মানেনি। বইকে হাতিয়ার করে পেরিয়ে যাচ্ছে একের পর এক বাধা। আর আজ দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় অসাধারণ ফল করে স্বপ্নপূরণের দিকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল সে।
ভাদোদরার বারানপুরার বাসিন্দা শিবম আর পাঁচজনের মতোই ছিল। পড়াশোনা, খেলাধুলা সবই চলত। ছবিটা বদলে গেল ২০১২ সালে। গুজরাটের ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা বেশ জনপ্রিয়। এইরকমই একদিন ছাদে দাঁড়িয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল শিবম। খেলতে খেলতে মুহূর্তের অসাবধানে ছাদের একেবারে ধারে চলে এসেছিল সে। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায় শিবম। বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে। মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাণে বেঁচে যায়, কিন্তু তার দুটো হাত আর একটা পা কাটা পড়ে।
জীবনের ছবিটাই বদলে যায় এরপর। কিন্তু সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করে শিবম সোলাঙ্কি। নিজেই চেষ্টা করে কনুইয়ের সাহায্যে লেখার অভ্যাস গড়ে তোলে। প্রস্থেটিকের পা-ও আসে তার। সেইভাবেই মনের জোরে ও একাগ্রতায় পড়াশোনা করতে লাগল সে। স্কুলও পাশে এসে দাঁড়াল। ফলও আসতে শুরু হল। দশম শ্রেণীর বোর্ডের পরীক্ষায় ৮১ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল শিবম। আর সম্প্রতি বিজ্ঞান শাখায় দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর পায় সে। যার ফলে উচ্ছ্বসিত পরিবার থেকে স্কুল, বন্ধুবান্ধব সবাই।
শিবমের চোখে এখন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। যেভাবেই হোক, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে তার। সবার জন্য কিছু করতে চায়। নিজের সম্পূর্ণটা দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে শিবম সোলাঙ্কি।