মাত্র সতেরো বছরের কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ ইতিমধ্যে সমস্ত পৃথিবীর কাছে একটি পরিচিত নাম। পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে তাঁর সক্রিয় আন্দোলন ইতিমধ্যে সারা ফেলে দিয়েছে। পনেরো বছর বয়সে সুইডেনের পার্লামেন্টের সামনে অবস্থান থেকে শুরু করে শেষপর্যন্ত পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু ধর্মঘট, তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। স্বীকৃতি এসেছে টাইমস পত্রিকা, বিজ্ঞান দূতাবাস, এমনকি সম্মিলিত জাতি সংঘ থেকেও। আর মহামারী করোনার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও নিজের দায়িত্বের পরিচয় রাখলেন এই কিশোরী। তাঁর ট্যুইটারের বক্তব্য অনুযায়ী, ইউনাইটেড নেশনস চিলড্রেনস' ফান্ডে তিনি ১ লক্ষ ডলার অনুদান প্রদান করবেন।
পরিবেশ আন্দোলনের গ্রেটার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে মিলেছে অর্থসাহায্যও। সেরকমই, ডেনমার্কের হিউম্যান অ্যাক্ট সংস্থা তাঁকে ১ লক্ষ ডলার অনুদান প্রদান করার কথা জানিয়েছে। আর গ্রেটা জানিয়েছেন, তিনি এই অর্থ তুলে দেবেন ইউনিসেফের হাতে। করোনা মহামারী ও তার প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিপন্ন শিশুদের কাছে নানারকম সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইউনিসেফ। তার মধ্যে যেমন আছে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী; তেমনই দরিদ্র দেশের শিশুদের খাবারের সংস্থানের বিষয়েও চিন্তিত ইউনিসেফ। তবে সারা পৃথিবীজুড়ে এমন একটি উদ্যোগ নিতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। আর তাই নাগরিকদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে ইউনিসেফ। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই গ্রেটা তাঁর অনুদানের টাকা তুলে দিচ্ছেন এই সংস্থার হাতে। সেইসঙ্গে তিনি প্রত্যেকের কাছে আবেদন জানিয়েছে নিজেদের সাধ্যমতো অনুদান দেওয়ার।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, সাম্প্রতিক মহামারীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। এই অভিঘাত তাৎক্ষণিকভাবে খুব বেশি বোঝা না গেলেও, সমাজে এক সুদূরপ্রসারী ক্ষতি করে যাবে। আর সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়বে দরিদ্র দেশের ও দরিদ্র পরিবারের শিশুদের মধ্যে। তাই শিশুদের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়ে পরিস্থিতি যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে ইউনিসেফ। আর গ্রেটা থানবার্গের মতো জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এই উদ্যোগের পাশে এসে দাঁড়ানোয় এই কাজ যে আরও সহজে হবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।