সমুদ্রগর্ভে কেবলের তার, নেপথ্যে গুগল এবং ফেসবুক

সমুদ্রের তলদেশেই আস্ত নেটওয়ার্ক সিস্টেম (Submarine Internet Cable)। যা জুড়ে রাখবে বিশ্বের সমস্ত মহাদেশগুলিকে। প্রতি সেকেন্ডে পৌঁছে দেবে কয়েকশো টেরাবাইট ডেটা। ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ পরিকাঠামো হতে চলেছে এমনটাই। শুধু একটি নয়, একাধিক এই ধরনের দ্রুত গতির ইন্টারনেটবাহী সাবমেরিন কেবলের জাল স্থাপন করা হচ্ছে বিশ্বের মহাসাগরগুলির তলায়। আর তার নেপথ্যে রয়েছে দুটি অতিপরিচিত আন্তর্জাতিক সংস্থা— গুগল (Google) এবং ফেসবুক (Facebook)।

হ্যাঁ, এই দুই সার্চ ইঞ্জিন এবং সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্টই এবার বিপ্লব আনতে চলছে ইন্টারনেটে কাঠামোতে। তবে এই প্রথম নয়, যুক্তরাজ্যে কয়েক বছর আগে এই ধরনের সাবমেরিন কেবল ইন্টারনেট স্থাপন করেছে গুগল। গুগলের প্রতিস্থাপিত ‘ডুনান্ট’ কেবলের সক্ষমতা ২৫০ টেরাবাইট প্রতি সেকেন্ড। তবে সেই দক্ষতাকেও ছাপিয়ে যাবে দুই টেক-জায়েন্টের ভবিষ্যৎ প্রোজেক্ট।

ইতিমধ্যেই সাবমেরিন কেবল প্রোজেক্টে অন্যান্য বেশ কিছু টেক-কোম্পানির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে গুগল। বড়ো অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে মোট ১৯টি প্রোজেক্টে। অন্যদিকে ফেসবুক ব্যক্তিগত উদ্যোগে এককভাবেই স্থাপন করতে চলেছে এই ধরনের ৫টি কেবল। যার দুটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।

প্রশ্ন থেকে যায়, কীভাবে এক মহাদেশকে অন্য মহাদেশের সঙ্গে জুড়বে এই ইন্টারনেট ব্যবস্থা? বিষয়টি শুনতে ঠিক যতটা সহজ, বাস্তবে ততটাই কঠিন এই দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট কেবল স্থাপনা। বিশেষ ধরনের জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশে প্রথমে টানেল তৈরি করে, তারপর সেখানে স্থাপন করা হবে কেবলগুলি। যার পরিধি কমপক্ষে দু’তলা বাড়ির সমান। দৈর্ঘ্য ৩৭ হাজার কিলোমিটার। ইতিমধ্যেই গুগলের মালিকানায় রয়েছে এই ধরনের বিশেষ ৫৫টি জাহাজ। লোডিং-এর কাজ শেষ হলেই আগামী ৪-৫ সপ্তাহের মধ্যেই অভিযানে নামবে এই জাহাজগুলি।

আরও পড়ুন
গ্রিন টি-র গুণাগুণের আবিষ্কারকের সম্মানে বিশেষ ডুডল গুগলের

ফেসবুক ও গুগলের বিবৃতি অনুযায়ী, অত্যাধুনিক ‘ফাইবার সুইচিং’ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে এই প্রোজেক্টে। যা ইন্টারনেট পরিষেবাকে নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে বিশেষভাবে সক্ষম। থাকবে না ব্ল্যাকআউটের সম্ভাবনাও। মহাদেশগুলিকে এই ধরনের কেবলের মাধ্যমে সংযুক্ত করার পর, স্থানীয় কেবল অপারেটরদের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে গ্রাহকদের কাছে। 

আরও পড়ুন
বাঙালি কিশোরীর তৈরি বিশেষ মাস্ককে স্বীকৃতি গুগলের

গুগলের দাবি, তাদের সাম্প্রতিকতম প্রোজেক্ট ‘গ্রাস হপার’ কেবল একাই ৩৪০ টেরাবাইট ডেটা সরবরাহ করতে সক্ষম প্রতি সেকেন্ডে। যার অর্থ, একই সঙ্গে ৪কে ভিডিও দেখতে পারবেন প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ মানুষ। ফলত হলফ করে বলা যায়, আগামীদিনে বদলে যেতে চলেছে মানুষের ভার্চুয়াল জীবনের গোটা ছবিটাই…

আরও পড়ুন
৪০০ বছর পর এত কাছাকাছি শনি-বৃহস্পতি, বিরল ঘটনায় সেজে উঠল গুগল ডুডলও

Powered by Froala Editor

More From Author See More