সারা পৃথিবীর মানুষ এখন করোনা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রতিদিন ছড়িয়ে পড়ছে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ। কিন্তু ভাইরাসের সংক্রমণ তো একদিন নিয়ন্ত্রণে আসবে নিশ্চই। অথচ মানুষ তার মৃত্যুদূতকে ডেকে এনেছে নিজেই। সেদিকে এখনও সঠিক দৃষ্টি কেউ দিয়েছেন কি? বিশ্ব উষ্ণায়ন বা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তো দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই আলোচনা চলছে। কিন্তু মানুষের জীবনে এই পরিবর্তন ডেকে আনতে পারে অকালমৃত্যুও। এমনকি সমস্ত ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথোজেনের মিলিত সংক্রমণে প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার থেকেও বেশি হতে পারে উষ্ণায়নের কারণে মৃত্যুর পরিমাণ।
ক্লাইমেট ইম্প্যাক্ট ল্যাবরেটারির সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর ন্যাশানাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ কর্তৃক এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হওয়ায় সারা পৃথিবীতেই যথেষ্ট চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক বছরে ৪১টি দেশের ৩৯৯ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যুর খতিয়ান নিয়ে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, সরাসরি তাপপ্রবাহের কারণে খুব কম সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হলেও তার পরোক্ষ প্রভাব বেশ ভয়ঙ্কর। কারোর মৃত্যু হয়েছে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে তো কারোর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায়। আর এই সবকিছুর কারণ আসলে বাড়তে থাকা উষনতা।
শিকাগো ইউনিভার্সিটির পরিবেশ অর্থনীতিবিদ আমির জিনা গবেষণার সূত্র ধরে জানিয়েছেন, ক্রমশ পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ২১০০ সালের মধ্যে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৭৫ জন মানুষের মৃত্যু ঘটাবে তাপপ্রবাহ। আর এই সংখ্যাটা সমস্ত সংক্রামক রোগের কারণে মিলিত মৃত্যুর থেকেও বেশি। বিশেষ করে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে এই উষ্ণায়নের ফল আরও মারাত্মক হবে। আর এর প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতেও। আগামী শতাব্দীর শুরু থেকেই অর্থনীতি অন্তত ৩.২ শতাংশ গড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে যতই গবেষণা এগোচ্ছে, তত বেশি আশঙ্কাই তৈরি হচ্ছে। এর হাত থেকে মুক্তির কার্যকর উপায় কি আদৌ পাওয়া যাবে? নাকি ততদিনে পৃথিবী এগিয়ে যাবে নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বাকি পৃথিবীর থেকে তিনগুণ দ্রুত বাড়ছে দক্ষিণ মেরুর উষ্ণতা, জানাল গবেষণা