জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং উষ্ণায়ন নিয়ে চিন্তিত গোটা বিশ্ব। বিজ্ঞানীরা তো বটেই, পরিবেশ বাঁচাতে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ, এমনকি কচিকাঁচারাও। এই একই হারে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রকোপ বজায় থাকলে এক শতকের মধ্যে মানব সভ্যতা নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কাও জানিয়েছেন গবেষকরা। এরই মধ্যে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল গবেষণায়। জলবায়ু সংকটের (Climate Change) কারণে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাতৃগর্ভস্থ ভ্রূণ (Embryo)। ক্রমশ বাড়ছে অপরিণত সন্তানপ্রসবের সম্ভাবনাও।
একটি নয়, একইসঙ্গে বিশ্বের ছ’টি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সম্প্রতি ‘পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড প্যারেন্টাল এপিডেমিওলজি’ জার্নালে একত্রে প্রকাশিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রগুলি। শুধু মাতৃগর্ভস্থ ভ্রূণই নয়, জন্মের পর শিশুর স্বাস্থ্য এবং তার শৈশবকেও বিপর্যস্ত করে তুলছে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব। মানুষ তো বটেই, অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও ঘটছে একই ঘটনা। যা যথেষ্ট চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিজ্ঞানীদের কপালে। কিন্তু সার্বিকভাবে পৃথিবীর উষ্ণতাবৃদ্ধি কীভাবে প্রভাব ফেলছে ভ্রূণের ওপর?
প্রথমেই নজর দিতে হবে জলবায়ু সংকটের কারণে বৈশ্বিক পরিবর্তনগুলির দিকে। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে দাবানলের প্রকোপ। দাবানলে কাঁচা কাঠের দহনে তৈরি হচ্ছে কার্বন মনো-অক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস। যা ধীরে ধীরে বিষিয়ে তুলছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে। সেইসঙ্গে জীবাশ্ম-জ্বালানির ব্যবহার তো রয়েছেই। আর এইসব গ্যাসের প্রভাবেই ক্রমশ প্রজনন শক্তি হারাচ্ছেন মহিলারা। বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাবে মাতৃদেহে জটিলতাও বাড়ছে বেশ দ্রুত হারে। ফলে, পুষ্টির অভাবে সম্পূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারছে না ভ্রূণ। অনেক সময় সদ্যোজাতের ত্বকের বিকাশ না হওয়ায়, দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিও বেরিয়ে আসছে সন্তানপ্রসবের সময়। পরিণতি— জন্মলগ্নেই মৃত্যু। তাছাড়াও অপরিণত শিশুর জন্মের হারও আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ।
তাছাড়াও অস্বাভাবিক হারে শিশুদের ওজন বৃদ্ধিতেও আশঙ্কিত গবেষকরা। ২ লক্ষাধিক শিশুর ওপর একটি বৈশ্বিক সমীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা দেখেন, অন্ততপক্ষে ১৮ শতাংশ শিশুই স্থূলতার শিকার। গবেষকরা বিষয়টিকে দেখছে অনেকটা এপিডেমিক বা অতিমারী হিসাবেই।
আরও পড়ুন
বরফ-পাহাড়ে নৃত্যানুষ্ঠান, পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ সিডনিতে
পরিবেশদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। একাধিকবার এমন দাবি করেছেন গ্রেটা থুনবার্গ-সহ বিশ্বের খুদে পরিবেশকর্মীরা। তাদের সেই আশঙ্কা একশো শতাংশ সত্যি, এবার তা প্রমাণিত হল খাতায় কলমে। কিন্তু এমন রিপোর্ট পাওয়ার পরেও কি সার্বিকভাবে কোনো পদক্ষেপ নেবেন বিশ্বের শক্তিধর দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা? জানা নেই উত্তর…
আরও পড়ুন
বস্তিজীবনের পাশাপাশি পরিবেশ বাঁচাতেও লড়ছেন কলকাতার যুবক
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
হেরে গেল পরিবেশ, আদালতের রায়ে শিলমোহর পুরুলিয়ার বিদ্যুৎ প্রকল্পেই