সম্প্রতি চলে গেছে ভূত চতুর্দশী। কিন্তু মিছিমিছি ভূতের ভয় পেতে কার ভাল লাগে বলুন? কিন্তু তাই বলে ভূতুড়ে ফুল! আজগুবি শোনালেও, ঠিক এই নামেই একটি বিশেষ ফুল রয়েছে পৃথিবীতে। দ্য ঘোস্ট অর্কিড। নামটা এরকম হলেও, ফুলটা কিন্তু সত্যিই দেখবার মতো। দুষ্প্রাপ্য এই গাছটিই বর্তমানে ঘোর সংকটের মুখে।
মূলত কিউবা এবং ফ্লোরিডার কিছু ঘন জঙ্গলে এই অর্কিড দেখতে পাওয়া যায়। যে সব জায়গা স্যাঁতস্যাঁতে, আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি, সেই জায়গা এদের বেড়ে ওঠার পক্ষে আদর্শ। কারণ এই প্রজাতির অর্কিড বাতাস থেকেই সরাসরি বাস্প শোষণ করে। আর সেটা নিয়েই বেড়ে ওঠে। আরও একটা বিশেষত্ব হল, এদের কোনও পাতা নেই। এমনিতে আর কোনও বিশেষত্ব নেই। আসল ব্যাপারটা ঘটে ফুল ফোটার সময়। একটু অদ্ভুত দেখতে এই ফুলটা। সেই জন্যই নাম হয়েছে ‘ঘোস্ট অর্কিড’। কিন্তু সৌন্দর্যে অন্যতম সুন্দর এই অর্কিডের ফুল। তাই দুষ্প্রাপ্য হলেও, উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয় এই বিশেষ অর্কিড।
কিন্তু এই ঘোস্ট অর্কিডের অস্তিত্ব নিয়েই দেখা দিয়েছে সমস্যা। সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, যেগুলো এদের বেড়ে ওঠার আদর্শ জায়গা, সেখান থেকে আর্দ্রতা ও জলের ভাগ কমছে উল্লেখযোগ্যভাবে। ফলস্বরূপ, বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ছে এই অর্কিডের। কিন্তু কেন হচ্ছে এরকম? বিজ্ঞানীরা দায়ী করছেন সভ্যতার ক্রমবর্ধমান উন্নয়নকে। যে সমস্ত খাল, ছোট নদী দিয়ে কয়েক বছর আগে জল আসত এখানে, সেগুলোর মুখ আস্তে আস্তে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সভ্যতার অগ্রগতি হচ্ছে বটে, বিপদে পড়েছে ঘোস্ট অর্কিডের মতো উদ্ভিদগুলো। বিকল্প জলের উৎস দেওয়ার কথা বারবার বলা হলেও, এখনও তার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়াও আরও কারণ রয়েছে। কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে, আখেরে বিপদেই পড়েছে এই দুষ্প্রাপ্য গাছটির অস্তিত্ব।