করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে পৃথিবীর নানা দেশে লকডাউনের রাস্তা বেছে নিয়েছে সরকার। এর ফলে স্বাভাবিক জনজীবন আমূল বদলে গিয়েছে রাতারাতি। ভারতেও একমাস ধরে টানা লকডাউন চলছে। সরকারের প্রস্তাবিত সময়সীমা এবার শেষ হওয়ার মুখে। তবে লকডাউন উঠে গেলেই কি আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে জনজীবন? এমনটা অবশ্য মনে করছেন না অনেকেই। তাঁদের মতে, সরকারি বিধিনিষেধের সঙ্গে মানুষের মনে জমা হয়েছে তীব্র আতঙ্ক। এই আতঙ্কের হাত থেকে মুক্তি মিলবে না এত সহজে। ফলে করোনা মহামারী মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও এক গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে যাবে। আমাদের চেনা পৃথিবীটা বদলে যাবে অনেকটাই। সেই বদল কেমন হবে সেই বিষয়ে ভবিষ্যতবাণী করা অবশ্য সম্ভব নয়। তবে কিছু আভাস পাওয়া যায় মাত্র।
লকডাউন উঠে গেলে দেশের জনজীবন কেমন হবে, তার একটা আভাস পাওয়া যায় জার্মানির চেহারা থেকে। দীর্ঘ একমাসের উপর লকডাউন চলার পর কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করল সরকার। অবশ্য তাতে পরিবর্তন আদৌ কিছু হল কি? জার্মানির সমস্ত রাস্তা এখনও আগের মতোই শুনশান। মানুষের দেখা নেই সেখানে। সরকারি নিষেধ অনেকটাই লঘু করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের ভয় এত সহজে যাওয়ার নয়। এখনও সেখানকার মানুষ স্বচ্ছন্দে মেলামেশা করতে ভয় পাচ্ছেন। কোনো পরিচিত বা অপরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা হলে এখনও হ্যান্ডশেক করছেন না প্রায় কেউই। ফলে সরকারি বিধিনিষেধ উঠে গেলেও কার্যত এখনও সেখানে লকডাউন চলছে।
ভারতের ক্ষেত্রেও চেহারাটা অনেকটা এরকমই হবে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে সেইসঙ্গে এই কয়েক সপ্তাহের জমা হওয়া দারিদ্র্য ফুটে বেরোবে। তার প্রকাশ কেমন হবে, সেকথা অবশ্য বলা মুস্কিল। লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়েছেন বহু শ্রমিক। এরপরও কি রোজগারের সুযোগ পাবেন তাঁরা? আর চাকরির প্রতীক্ষায় যেসব তরুণ তরুণী প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তাদেরই বা কি হবে? বন্ধ শিক্ষাক্ষেত্রই বা এরপর ঠিক কোন পদ্ধতিতে চলবে? এমনই অসংখ্য প্রশ্ন জমে আছে। সঠিক উত্তর পেতে এখনও বেশ কিছুদিন লেগে যাবে।