দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিপূরণের চাপ! আদালতে ইতালি বনাম জার্মানি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গোটা ইউরোপজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল নাৎসি জার্মানি। তবে কড়ায়গণ্ডায় মূল্যও দিতে হয়েছিল তার। দশকের পর দশক ধরে ক্ষতিপূরণের বোঝা বয়ে বেড়াতে হয়েছে জার্মানিকে। ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মতবিরোধে এবার আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে দ্বারস্থ হল জার্মানি (Germany)। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে অন্যায্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য ক্রমশ চাপ দিচ্ছে ইতালি (Italy)। অভিযোগ উঠল এমনটাই। 

ইতালির এই দাবি আজকের নয়। এই বিরোধের শুরু ২০০৮ সালে। সেইবছর ইতালির সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, তাস্কানিতে নাৎসি বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে জার্মানিকে। ধার্য করা হয়েছিল ১০ লক্ষ ইউরোর ক্ষতিপূরণমূল্য। তবে এই ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে জার্মানি। ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদলতে ওঠে মামলাটি। রায় গিয়েছিল জার্মানির পক্ষেই। 

জার্মানির অভিযোগ, আন্তর্জাতিক আদালতের এই নির্দেশের পরেও ক্রমাগত ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইতালি। ২০১২ সালের পর নতুন করে ইতালির সর্বোচ্চ আদালতে দায়ের করা হয়েছে ২৫টির বেশি মামলা। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলায় বড়ো অঙ্কের ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে ইতালি। এমনকি ক্ষতিপূরণ দেওয়া না হলে, রোমে জার্মানির মালিকানাধীন বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও জানিয়েছে ইতালির আদলত। 

ইতালির সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে জার্মান সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং নিলাম করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন। যার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু জার্মান ভবন, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইতালির এই রায়ের বিরুদ্ধেই জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে সম্প্রতি ইতালির বিরুদ্ধে মামলা করে জার্মানি। 

আরও পড়ুন
নবাবি আমল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পলতা-ইছাপুরের কুখ্যাত ‘ফাঁসিডাঙা’

জার্মানির অভিমত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে ১৯৪৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কয়েক বিলিয়ন ইউরোর ক্ষতিপূরণ দিয়েছে জার্মানি। সেই তালিকায় ছিল ইতালিও। কাজেই আনুষ্ঠানিকভাবে ইতালিকে সমস্ত ক্ষতিপূরণই দিয়েছে তারা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে, তাস্কানি হত্যাকাণ্ডে প্রভাবিত পরিবারদের সাহায্য পাওয়ার কথা ইতালির থেকেই। যদিও আন্তর্জাতিক আদালতে এই বিচারের ফলাফল প্রকাশ হতে লেগে যেতে পারে বেশ কয়েক বছর। এখন দেখার ইতালি প্রশাসনের হাত থেকে রোমে অবস্থিত জার্মান প্রতিষ্ঠানগুলি আদৌ রক্ষা পায় কিনা… 

আরও পড়ুন
মৃতদেহের দৌলতে বাঁচল অসংখ্য প্রাণ! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঘটেছিল এমনই

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
বোমা আটকাতে বাঁশের আচ্ছাদন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এভাবেই নিস্তার পেয়েছিল তাজমহল

More From Author See More