লকডাউনের জেরে টান পড়েছে পশুখাদ্যের সরবরাহে। অন্যদিকে, জনশূন্য চিড়িয়াখানাগুলিও। এই মহামারীর সময় দর্শক আসবেই বা কোথা থেকে? তাই কার্যত চিড়িয়াখানাগুলিতে বন্ধ আয়ের খাতা। তাই চিড়িয়াখানার পশুর মাংসই পশুখাদ্য হিসাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ।
জার্মানির নয়মুনস্টার চিড়িয়াখানায় প্রায় ৭০০ বন্যপ্রাণীর বাসস্থান। রয়েছে ১০০টিরও বেশি প্রজাতি। চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর ভেরেনা ক্যাসপারি একটি তালিকাও প্রস্তুত করেছেন। কোন প্রাণী, কোন ক্রমে কসাইখানায় যাবে, তার ভিত্তিতেই তৈরি এই তালিকা। তবে কোন প্রাণীকে প্রথমে হত্যা করা হবে, জানা নেই। তালিকার একদম শেষে নাম রয়েছে ভিটাস নামের বারো ফুট লম্বা একটি শ্বেত ভল্লুকের।
ক্যাসপার স্পষ্টতই জানান, খাবার কেনার সামর্থ্য ফুরোলে অথবা খাদ্যের জোগান বন্ধ হলে বাধ্য হয়েই তাঁকে বেছে নিতে হবে এই নিষ্ঠুরতাকে। নাহলে হয়তো অভুক্ত থেকেই মারা যাবে প্রাণীরা।
জার্মান সরকার ইতিমধ্যেই নানানভাবে ত্রাণের বন্দোবস্ত করেছে। ৭৫০ বিলিয়ন ইউরোর মোতায়েন করা হয়েছে ত্রাণের জন্য। যা পৃথিবীর যে কোনো দেশের থেকেই বেশি। ব্যবসা এবং নানান কারখানার খরচের পাশাপাশি সাহায্য পাচ্ছেন বাড়িতে বন্দি থাকা শ্রমিকরাও। কিন্তু চিড়িয়াখানাগুলির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। ঘোষণা করা হয়নি কোনো বিশেষ ত্রাণ তহবিলের কথা।
বার্লিনের অ্যাসোসিয়েশন অফ জ্যুয়োলজিক্যাল গার্ডেনস সংস্থার পক্ষ থেকে, চান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেলের কাছে ১০০ মিলিয়ন ইউরোর জরুরি সাহায্য চাওয়া হয়েছে। নয়মুনস্টার সহ মোট ৫৬টি জার্মান চিড়িয়াখানা ওই সংস্থার অন্তর্গত।
ওই সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। জানানো হয়েছে তীব্র অর্থ সংকটের কথা। উল্লেখ্য ওই চিড়িয়াখানাগুলিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণীও। কয়েকটি চিড়িয়াখানায় চলছে আন্তর্জাতিক সংরক্ষণের জন্য প্রজনন কর্মসূচিও।
তবে ওই সংস্থা থেকে প্রত্যেক চিড়িয়াখানাকেই জানানো হয়েছে, অন্যান্য জরুরি পরিষেবার মতোই চিড়িয়াখানাকে চালু রাখতে হবে। কোনোভাবেই আর্থিক ক্ষতির জন্য বন্যপশুদের হত্যা করা যাবে না। ব্যয়বহুল হলেও চালিয়ে যেতে হবে পশুদের যত্ন এবং খাবারের খরচ।