বছর সাতেক আগে হঠাৎই চমকে গিয়েছিলেন দুবাই বিমানবন্দরের কর্মীরা। বিমান থেকে যে মানুষটি নামলেন, তাঁর চেহারা দেখেই অবাক সকলে। আদৌ কি তিনি মানুষ? এমন প্রশ্ন সকলের মনে। মানুষ যদি, তাহলে মাথার উপর দু-জোড়া শিং কীকরে থাকে! শুধু তাই নয়, দুটি ভুরুকে ঘিরে, নাকের দুপাশে, এমনকি ঠোঁটের দুপাশেও অসংখ্য পিয়ার্সিং। আর কানের লতি দেখে তো মনেই হয় না, সে জোড়া কোনো মানুষের। কিন্তু তবু স্বীকার না করে উপায় নেই, তিনি জলজ্যান্ত একজন মানুষ। জার্মানির একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী রোলফ বুকলজ।
২০১৪ সালে দুবাই বিমানবন্দর থেকে আবারও জার্মানি ফিরে যেতে হয় বুকলজকে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত ছাড়পত্র দিলেও শহরের কোনো হোটেল তাঁকে থাকার জায়গা দিতে রাজি হয়নি। আর এরপরেই বুকলজকে নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। জানা যায়, ইতিমধ্যে ২০১০ সালেই তিনি সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশিবার দেহগঠন পরিবর্তন করে নাম তুলেছেন গিনেস বুকে। আজ পর্যন্ত সেই রেকর্ড ভেঙেছেন কেবল তিনি নিজেই। ২০১০ সালে শরীরে ছিল ৫৫৩টি পিয়ার্সিং। আর এই এক দশকে সংখ্যাটা ৫৮০ পেরিয়েছে। সেইসঙ্গে প্রায় সারা শরীরজুড়ে আঁকা ট্যাটু। শুধু পিয়ার্সিং-এ মন ভরছিল না। তাই শেষ পর্যন্ত মাথার উপরে দুটি কৃত্রিম শিং-ও তৈরি করে নিয়েছেন। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটা অঙ্গে কৃত্রিম উপবৃদ্ধি তৈরি করেছেন তিনি।
অবশ্য শুরু থেকেই এমন ছিলেন না বুকলজ। ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ট্যাটু আঁকাতেও ভয় পেতেন তিনি। ১৯৯৯ সালে, তাঁর ৪০ বছর বয়সেই বন্ধুরা জোর করে একটি ট্যাটু এবং পিয়ার্সিং করান। আর সেই থেকেই বিষয়টির সঙ্গে ভালোবাসা তৈরি হয়ে যায় বুকলজের। দেখতে দেখতে প্রায় পুরো শরীরটাই বদলে ফেলেছেন তিনি। বুকলজ অবশ্য বলেন, তিনি আসলে একটুও বদলাননি। কারণ মানুষের পরিচয় তো তার বাইরের শরীরে নয়। মানুষের পরিচয় মনের মধ্যে। আর সেখানে কিছুই বদলায়নি। জন্ম থেকে যে শরীর থাকে, তাকেই সারা জীবন বইতে হবে এমনটা মনে করেন না বুকলজ। তাঁর মতো আরও অনেকেই দেহগঠনের পরিবর্তন ঘটান। কিন্তু বুকলজ সবাইকেই হারিয়ে দিয়েছেন। নতুন রেকর্ড তৈরির স্বপ্ন আজও দূরপরাহত।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
গাছতলায় ‘মুঘল-এ-আজম’এর গান রেকর্ড; গানের পুস্তিকা লিখেছেন শার্লক হোমসও!