ঈদ-উল-ফিতর। মুসলিম ধর্মালম্বীদের অন্যতম পরব। তবে এই বছর ঈদের ছবি একেবারে আলাদা। করোনা ভাইরাসের দাপটে পরম উৎসবের দিনেও গৃহবন্দি মানুষ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিঘ্নিত পবিত্র রমজান মাসের প্রার্থনাও। তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও সামাজিক সম্প্রীতির ছবি সত্যিই অবাক করে দিচ্ছে আমাদের। এই ধার্মিক মানুষগুলির যাতে নামাজ পড়তে অসুবিধা না হয়, তার উদ্যোগেই এবার এগিয়ে এল জার্মানির একটি গির্জা।
করোনার মোকাবিলা করে উঠতে পেরেছে যে দেশগুলি, সেই সারিতে অন্যতম নাম জার্মানি। তবে লকডাউন উঠে গেলেও, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই নির্দেশ দিয়েছে জার্মান সরকার। কমপক্ষে দেড় মিটার অর্থাৎ পাঁচ ফুট দূরত্ব মেনেই যাবতীয় কাজ কর্ম চলছে সে-দেশে। গত মে মাসের ৪ তারিখ থেকেই খুলে গেছে ধর্মীয় স্থানগুলিও। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যই সকলকে নামাজ পড়ার জায়গা করে দিতে পারছে না আঞ্চলিক মসজিদগুলি।
বার্লিনের দার-আস-সালাম মসজিদের ছবিও অনেকটা এমনই ছিল। তবে ঘটনা প্রকাশ পেতেই মুক্ত হস্তে এগিয়ে আসে নিকটবর্তী ক্রুজবার্গের চার্চ, মার্থা লুথেরান। মুসলমান মানুষদের জন্যই ঈদ এবং জুম্মাবারের নামাজ পড়ার জায়গা করে দেয় এই গির্জা। নামাজে যোগ দিয়েছিলেন ওই গির্জার স্বয়ং যাজকও।
<!-- wp:gallery {"ids":[14841],"align":"center"} --><!-- /wp:gallery -->প্রথমবার কোনো গির্জায় নামাজ পড়ার অনন্য অনুভূতিতেই এখন ডুবে আছেন আঞ্চলিক মানুষেরা। নামাজের জন্য এই গির্জাকেই আপন করে নিয়েছেন তাঁরা। গির্জাই হোক বা মসজিদ— সব শেষে তা তো ঈশ্বরেরই স্থান। মহামারীর মধ্যে এই ঐক্যের ছবি, মানবিকতার ছবি, সম্প্রীতির ছবি বার বার চমকে দিচ্ছে আমাদের। বোঝাচ্ছে, ‘ধর্ম’ নিছকই একটা শব্দ, একটা বিশ্বাস। ফারাক থাকলেও, অন্য ধর্মের উৎসবে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার থেকে বড় কিছুই হতে পারে না। আশা করা যায়, জার্মানির দেখানো পথে ভেদাভেদ ভুলে এভাবেই সার্বজনীন হয়ে উঠুক সমস্ত ধর্মীয় উৎসব…
Powered by Froala Editor