কোনোরকম চক্ষু প্রতিস্থাপন নয়। নয় ওষুধের ব্যবহারও। এবার জিন প্রযুক্তিকে (Gene Technology) হাতিয়ার করেই গবেষকরা দৃষ্টি (Vision) ফেরালেন অন্ধ ব্যক্তিদের। হ্যাঁ, মার্কিন বিজ্ঞানীদের এই সাফল্য এক নতুন মাইলফলক তৈরি করল চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতে। সম্প্রতি তাঁদের এই সাফল্যের কাহন ও গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে নেচার পত্রিকায়।
লেবার কনজেনিটাল আমারোসিস বা সহজ কথায় এলসিএ। জিনবাহিত এই রোগ অনেকটা জন্মগতই। তবে জন্মের সময়ই দৃষ্টিহীনতার শিকার হন না এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। বরং, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে চলে যেতে থাকে দৃষ্টিশক্তি। মূলত, এই রোগের প্রভাবে রেটিনার ফটোরিসেপ্টর কোষগুলির বংশবৃদ্ধি বা বিভাজন থমকে যায়। পাশাপাশি কমতে থাকে কোষের সংখ্যাও। ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে একটা সময় পর চিরকালীন অন্ধত্বের শিকার হন রোগীরা।
এলসিএ আক্রান্তদের ওপরেই মূলত পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আই ইনস্টিটিউটের জিন বিশেষজ্ঞরা। রোগীর চোখ থেকেই তাঁরা সংগ্রহ করেছিলেন রেটিনাল সেল। ক্রিসপার প্রযুক্তির সাহায্যে ল্যাবরেটরিতে সংগৃহীত সেই কোষের বেশ কিছু জেনেটিক্যাল পরিবর্তন করেন তাঁরা। তারপর তা সরাসরি ইনজেক্ট করা হয় রোগীর চোখে।
মাস দুয়েক আগেই পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল বেশ কিছু এলসিএ আক্রান্ত রোগীদের ওপর। তাঁদের মধ্যে ৭ জন ব্যক্তির দৃষ্টি ফিরেছে বলে জানাচ্ছে তাঁদের গবেষণাপত্র। উল্লেখজনকভাবে ফের কোষ বিভাজন শুরু হয়েছে চোখের ফটোরিসেপ্টরগুলির। শুধুমাত্র দৃষ্টিই নয়, সমস্ত রং-ও পৃথক পৃথকভাবে সনাক্ত করতে পারছেন চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা।
আরও পড়ুন
ফিরতে চলেছে প্রাগৈতিহাসিক ম্যামথ? আশা দেখাচ্ছে জিন টেকনোলজি
তবে এই গবেষণা সর্বাঙ্গে সফল কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন গবেষকরা। কেননা, ৭ জন রোগীর ক্ষেত্রে সাফল্য মিললেও, দৃষ্টি ফেরেনি অনেকের। গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ মার্ক ক্যাসি জানাচ্ছেন, যাঁদের ক্ষেত্রে রেনিটাল কোষ সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁদের দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তীতে থেরাপির ডোজ বাড়িয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ে ফের চেষ্টা করা হবে বলেই জানাচ্ছেন তিনি। সামান্য বদল আনা হতে পারে প্রযুক্তিতেও। সবমিলিয়ে মার্কিন গবেষকদের এই সাফল্য চক্ষু চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিল, তাতে সন্দেহ নেই কোনো…
আরও পড়ুন
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির প্রতিভার রহস্য কি লুকিয়ে জিনেই, জানান দেবে উত্তরপ্রজন্ম
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
২০ হাজার বছর আগেও করোনার প্রাদুর্ভাব! প্রমাণ দিল জিন প্রযুক্তি