বছর দেড়েক আগের কথা। ২০১৯ সালের একেবারে শেষের দিকে চিনে প্রথম ধরা পড়েছিল নতুন এক মারণ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। কোভিড। সেই ভাইরাসের প্রকোপ যে গোটা বিশ্বে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি গবেষকরা। কিন্তু সত্যিই কি এই ভাইরাস মানব সভ্যতার কাছে নতুন ছিল? সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে অন্য কথাই। চলতি মহামারীর প্রায় ২০ হাজার বছর আগেও মানুষের সঙ্গে সংঘাত বেঁধেছিল এই ভাইরাসের। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য উঠে আসার পরই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে বিজ্ঞানীমহলে।
সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম সারির বিজ্ঞান পত্রিকা ‘কারেন্ট বায়োলজি’-তে ভাইরোলজি বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি। জড়িত ছিলেন বিশ্বের খ্যাতনামা মার্কিন ও অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা। কিন্তু কীভাবে ইতিহাস খুঁড়ে মানুষের সঙ্গে ভাইরাসের এই যোগসূত্র বার করলেন তাঁরা?
এ বিষয়ে পুরো কৃতিত্বই তাঁরা দিচ্ছেন প্রযুক্তিকে। জিনোম টেকনোলজির ওপর ভর করেই এই তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। আসলে ভাইরাস বংশবিস্তার করে মূলত মানবদেহে সংক্রমণের মাধ্যমেই। দেহের অভ্যন্তরেই ক্রমাগত মাল্টিপ্লিকেশন বা অনুলিপি গঠন করতে থাকে যে-কোনো ভাইরাস। আর তার ফলে বদলে যায় মানুষের স্বাভাবিক জিনের গঠন। পরিবর্তন লক্ষ করা যায় মানুষের জিনোম সিকোয়েন্সে। যে পরিবর্তন স্থায়ী হয় বছরের পর বছর ধরে। তবে তা সার্স-কোভ-২ এর থেকে ভিন্ন প্রজাতি হলেও, একই ধরনের মহামারি তৈরি করেছিল বলেই অনুমান বিজ্ঞানীদের।
মূলত চিন, জাপান এবং ভিয়েতনামের ২৬টি পৃথক জনজাতি গোষ্ঠীর আড়াই হাজার মানুষের জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করেছিলেন গবেষকরা। সেই বিশ্লেষণেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন, করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় কুড়ি হাজার বছর আগেই জিনের পরিবর্তন ঘটেছিল তাঁদের মধ্যে। অর্থাৎ, সেইসময়েও মহামারীর রূপ নিয়েছিল করোনাভাইরাস।
আরও পড়ুন
করোনাকালে অতিরিক্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার প্রবীণরা, জানাচ্ছে রিপোর্ট
তবে এশিয়ার এই তিন দেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে সেসময় কোভিড ছড়িয়েছিল কিনা তা বলা কঠিন। তার জন্য বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। কিন্তু এত এত বছর আগে, চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতেই মানুষ কীভাবে হার মানিয়েছিল ভাইরাসকে— তা নিয়ে থেকেই যাচ্ছে রহস্য…
আরও পড়ুন
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ডেল্টা প্লাস’, প্রকোপ ছড়াচ্ছে ভারতেও
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনা কেড়ে নিল ভারতের প্রথম এশিয়াডজয়ী সুরত সিং মাথুরকে