সমলিঙ্গ দম্পতিদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ জাপানের আদালতে

সমলিঙ্গ বিবাহ আইনি অপরাধ নয়। এই বার্তা আগেই দিয়েছিল টোকিও আদালত। তবে বুধবার আরও এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত জানাল আদালত। এতদিন জাপানের বুকে যে-সমস্ত সমলিঙ্গ দম্পতি বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তাঁদের প্রত্যেককে। এমনকি দেশের সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ যে লিঙ্গসাম্যের গুরুত্ব বুঝতে পারেনি, এর জন্য সেইসমস্ত নিপীড়নকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে জাপানের আদালত। লিঙ্গসাম্যের লড়াইতে এই রায়কে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন সমাজকর্মীরা।

সমলিঙ্গ বিবাহ আইনি অপরাধ নয় ঘোষণা করা হলেও জাপানে তার জন্য কোনো আইনি ব্যবস্থা ছিল না। ফলে বিবাহিত দম্পতিরা নিজেদের অবিবাহিত পরিচয়ই দিতেন। আর এর ফলে সামাজিক এবং পেশাগত জীবনেও নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হত বলে জানিয়েছেন অনেকে। বিবাহিত না হওয়ায় অনেক সময়ই থাকার জায়গাও পাওয়া যেত না। এমনকি বিবাহিত কর্মচারীরা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে যেসমস্ত সামাজিক সুরক্ষা অনুদান পেয়ে থাকেন, সেসবও পাওয়া যেত না।

এই সামাজিক বঞ্চনার বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিন সমলিঙ্গ দম্পতি। আর তাঁদের মামলার ভিত্তিতেই এই ঐতিহাসিক রায় দিল আদালত। আদালতের হিসাবে দেখা গিয়েছে, প্রত্যেক সমলিঙ্গ দম্পতি অন্তত বছরে ৯ হাজার ডলারের আর্থিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ দেশের সংবিধানে সমস্ত লিঙ্গের সমান অধিকারের কথাই বলা হয়েছে। টোকিও আদালত জানিয়েছে, প্রত্যেক দম্পতির জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করা হবে।

অবশ্য সমলিঙ্গ দম্পতিদের দাবি ছিল, তাঁদের প্রাপ্য সুরক্ষা দিতে হবে। এক্ষেত্রে আইনি জটিলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে আদালত। যেহেতু এতদিন তাঁরা বিবাহিত ছিলেন, এমন কোনো তথ্য নেই; তাই সেই সময়ের কোনো অনুদান দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এর পর থেকে সাধারণ দম্পতিদের মতোই সমলিঙ্গ দম্পতিরাও সমান অধিকার পাবেন বলেই জানানো হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সমলিঙ্গ বিবাহের আইনি নথিও তৈরি করা হবে। মামলার দাবি পূরণ না হলেও এই রায়কে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন লিঙ্গসাম্য আন্দোলনের কর্মীরা।

আরও পড়ুন
সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দিতে নারাজ কেন্দ্র, কী বলছেন বাংলার বিশিষ্টজনেরা?

Powered by Froala Editor