পরিত্যক্ত জালে জড়িয়ে প্রাণসংশয়, সংকটে গঙ্গার কাছিম এবং ডলফিন

প্লাস্টিক, বর্তমান সময়ে পরিবেশের সামনে এক বিভীষিকার নাম। অথচ প্লাস্টিক ছাড়াও জীবন চলে না। শুধুই স্থলভাগ নয়, প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব পড়ছে জলজ জীবনেও। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক্সেটার ইউনিভার্সিটি এবং ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার যৌথ সমীক্ষায় উঠে এল তারই একটি প্রায় অনালোচিত দিক। মাছ ধরার প্লাস্টিকের জালের প্রভাবেই সঙ্কটে পড়েছে গঙ্গা নদীর অসংখ্য প্রাণী। যাদের অনেকেই ইতিমধ্যে বিরল প্রাণী হিসাবে স্বীকৃত।

এক্সেটার ইউনিভার্সিটির গবেষক সারাহ নেল্মসের কথায়, জলজ প্রাণীর শরীরে প্লাস্টিক ঢুকে নানারকম রোগব্যাধির সৃষ্টি করে। তবে এই গবেষণার মুখ্য লক্ষ্য ছিল পরিত্যক্ত জালে আটকে পড়া প্রাণীরা। স্থানীয় মৎসজীবীদের সঙ্গে কথায় জানা গিয়েছে, মাছ ধরার জাল সারানো না গেলে তাঁরা নদীতেই সেগুলি ফেলে দেন। আর এর ফলে সঙ্কটে পড়েছে অন্তত ২১টি বিপন্ন প্রজাতি। এর মধ্যে গাঙ্গেয় কাছিম এবং গাঙ্গেয় ডলফিন তো আছেই। ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকদের মতে, একমাত্র উপযুক্ত সচেতনতাই এই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।

জুলজিক্যাল সোসাইটি অফ লণ্ডনের গবেষক হিদার কোল্ডওয়ে বলছেন, প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অধিকাংশ মাছ ধরার জাল তৈরি হয় নাইলন-৬ পলিমার থেকে। বাজারে এই পলিমারের যথেষ্ট দাম রয়েছে। এর থেকে কার্পেট ও অন্যান্য শৌখিন দ্রব্য তৈরি করা হয়। যদি উপযুক্ত প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাহলে জলজ প্রাণীরাও যেমন বাঁচবে, তেমনই মৎসজীবীরাও কিছুটা বাড়তি উপার্জনের মুখ দেখবেন। আর তা না হলে যে গঙ্গা নদীর জীববৈচিত্রকে বাঁচানো যাবে না, সেকথা বলাই বাহুল্য।

Powered by Froala Editor