বাড়ছে শব্দের প্রাবল্য, সংকটের মুখে গঙ্গার শুশুকরা

একটা সময় গঙ্গার বুকে প্রায়ই দেখা মিলত শুশুকের। শুশুক, অর্থাৎ গাঙ্গেয় ডলফিন। কিন্তু ধীরে ধীরে কমছে তাদের সংখ্যা। এখন সেরকম দেখাই যায় না। দেখা তো দূরের কথা, গঙ্গায় ‘আওয়াজ’ এত বেড়ে গেছে যে, তারা নিজেদের মধ্যে কোনও কথাও বলতে পারে না। সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এমন রিপোর্ট আবারও আমাদের দায়িত্বজ্ঞানকে প্রশ্নের সামনে ফেলে দিল।

গঙ্গার প্রাণী ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ এই শুশুক। বর্তমানে এদের খুব বেশি পরিমাণে দেখা না গেলেও, একটা সময় গঙ্গার নানা জায়গায় এদের বেশ ভালই দেখা যেত। চোরাশিকার, দূষণ ইত্যাদি নানা কারণে এদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে এসেছে। তারই মধ্যে গবেষকদের এই রিপোর্ট চিন্তায় ফেলে দিল প্রাণীবিদ ও পরিবেশপ্রেমীদের।

রিপোর্ট অনুযায়ী, জাহাজ, লঞ্চ চলাচলের আধিক্য এবং অন্যান্য নানা কারণে গঙ্গা এবং তার অববাহিকায় শব্দের প্রাবল্য বাড়ছে হু হু করে। আর এতেই বিঘ্নিত হচ্ছে শুশুকদের জীবনযাপন। তারা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতে পারছে না। সাধারণত ২০-১৬০ কিলোহার্টজ রেঞ্জে থাকে তাদের আওয়াজ, যা কিনা উচ্চ কম্পাঙ্কের। এই আওয়াজ করেই তারা দৈনন্দিন যাবতীয় যোগাযোগ চালায়। আর সেটাই বিপন্ন হচ্ছে। একে গাঙ্গেয় ডলফিনরা চোখে সামান্য কম দেখে, তার ওপর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমটিও কাছছাড়া হলে, তাদের বেঁচে থাকা ক্রমশ মুশকিল হয়ে পড়বে।

মাত্র কয়েকদিন আগেই একটি অন্তঃসত্ত্বা শুশুকের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে কর্তৃপক্ষের তো বটেই, আমাদের অর্থাৎ সাধারণ মানুষের চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। এর আগেও বহুবার এমনটা দেখা গেছে। আর কবে হুঁশ ফিরবে আমাদের? আর কবে সচেতন হব আমরা?