সারা পৃথিবীর কাছে তিনি পরিচিত মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্রী হিসাবে। এছাড়াও পরিবেশ ও সমাজকর্মী হিসাবে একাধিক জায়গায় নিজের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এমন একজন মানুষকেই শাস্তি পেতে হল অর্থ তছরুপ এবং জালিয়াতির অভিযোগে। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান বাণিজ্যিক আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে আশিসলতা রামগোবিনকে। ২০১৫ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২২ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ আনেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী এসআর মহারাজ। সোমবার সেই মামলার নিষ্পত্তি হল। ৭ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পেয়েছেন রামগোবিন।
নিউ আফ্রিকা অ্যালায়েন্স ফুটওয়্যার ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থার মালিক এসআর মহারাজ। এছাড়া অন্য নানা ব্যবসায়িক উদ্যোগে তিনি বিনিয়োগ করে থাকেন লভ্যাংশের বিনিময়ে। ২০১৫ সালে তাঁর কাছে হাজির হন আশিসলতা রামগোবিন। তিনি জানান, ভারত থেকে বেশ কিছু লিনেন কাপড় আমদানি করতে চলেছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ আর্থিক সমস্যার কারণে পোর্ট ট্যাক্স ও অন্যান্য কিছু কর দিতে পারছেন না। এই বিষয়ে যেন মহারাজ তাঁকে সাহায্য করেন। প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা চেয়ে বসেছিলেন রামগোবিন। সেইসঙ্গে নেট-কেয়ার নামক একটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির কাগজপত্রও দেখান। রামগোবিনের পারিবারিক পরিচয় এবং নেট-কেয়ার হাসপাতালের চুক্তিপত্র দেখে আর সংশয় রাখেননি মহারাজ। কিন্তু কিছুদিন পরেই এক পরিচিত সূত্রে জানতে পারেন নেট-কেয়ার এমন কোনো বাণিজ্যিক চুক্তি করেনি। আর তার পরেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
মহাত্মা গান্ধীর নাতনি এলা গান্ধী এবং সমাজকর্মী মেওয়া রামগোবিনের কন্যা আশিসলতা রামগোবিন। গান্ধীজির অন্যান্য বংশধরদের মতোই তাঁকেও সমাজকর্মী হিসাবেই চেনেন সকলে। ইন্টারন্যাশানাল সেন্টার ফর নন-ভায়োলেন্সের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। সমস্ত জায়গায় নিজেকে পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী হিসাবেই উল্লেখ করেন। অথচ এই পরিচয়ের আড়ালে তাঁর প্রকৃত জীবিকা যে জালিয়াতি, তা এতদিন অজানাই ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্যিক আদালতও নানা সংশয়ের কারণে রায় দিতে দেরি করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিটা তথ্যপ্রমাণ রামগোবিনের বিপক্ষেই যায়। তাঁর এই কাজ যে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তি অনেকটাই নষ্ট করল, সে-কথা বলাই বাহুল্য।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শেষ ১৪ বছরে পাঁচবার হত্যার চেষ্টা, ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী