ফরেস্ট অফিসার হওয়া হয়নি, তার বদলে থাইল্যান্ড জুড়ে গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন এই মানুষটি

স্বপ্ন ছিল ফরেস্ট অফিসার হবেন। তাহলেই বন-জঙ্গলে, প্রকৃতির মাঝে কাজ করতে পারবেন। সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। তার বদলে পূর্ণ হয়েছে আরও কিছু স্বপ্নের। যে প্রকৃতিকে নিয়ে কাজ করবেন ভেবেছিলেন, তাকেই প্রতিদিন লালন পালন করেছেন তিনি। আরও সবুজ করেছেন নিজের দেশকে। থাইল্যান্ডের নপ্পর্ন ননতাফা’র গল্প এমনই এক সবুজ স্বপ্নপূরণের গল্প।

একদম ছোট থেকেই মাটির সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ার জন্য, গাছ, ফসল ইত্যাদি নিয়েই কেটেছে শৈশব। সেই নেশা তখন থেকেই বোধহয় ঢুকে গিয়েছিল রক্তে। ননতাফা চাইতেন, এই গাছগাছালিই তাঁর জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠুক। সেই জন্যই থাইল্যান্ড সরকারের ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের কাজে যুক্ত হতে চাইতেন মনে প্রাণে। কিন্তু, সেসব ব্যর্থ হয়। তাঁর আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যায়। স্বপ্ন যেন হঠাৎ শেষের দিকে চলে গেল ননতাফা’র।

তাঁর নিজের মনেও নানা চিন্তা চলে আসে। এদিকে চারিদিকে বেড়েই চলেছে গাছ কাটার পরিমাণ; যার জন্য ১৯৯০-তে থাইল্যান্ডের প্রখ্যাত পরিবেশবিদ সেয়ুব নাখাসাথিয়েন আত্মহত্যাও করেন। তার ওপর দেশে শুরু হয়েছিল অসাধু কিছু চক্র। কিছু বিশেষ গাছ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভুল তথ্য দিয়ে নিজেদের ব্যবসা বাড়াচ্ছিল তারা। এত সব ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েন ননতাফা। নিজের পেশাগত জীবনের পাশাপাশি এই নিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টাও করেন তিনি। আস্তে আস্তে তাঁর এই সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ে জনসাধারণের মধ্যে।

জনগণকে সচেতন তো করা হল, কিন্তু গাছ বাড়াতে হবে তো! এবারও এগিয়ে এলেন ননতাফা। তৈরি করলেন নিজের প্ল্যাটফর্ম ‘খুনডং’। বৃক্ষরোপণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার একটা উপায় করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, জঙ্গলে গিয়ে গাছের বীজ সংগ্রহও করতেন তিনি। নানা জায়গায় গাছ পোঁতার কাজ শুরু হল। আর আজ? ননতাফা’র তৈরি করা সেই সংস্থার সদস্য ছাড়িয়েছে ৪০ হাজারের কোঠা। তৈরি করেছে স্কুল, ওয়ার্কশপ— আরও কত কি! গোটা থাইল্যান্ডে ছড়িয়ে আছে তাঁদের গাছ। ফরেস্ট অফিসার হওয়ার স্বপ্ন মুছে গেলেও মুছে যায়নি সবুজ ছেলেটার আওয়াজ। সেই স্বপ্ন রোজ বাড়ছে তাঁর। এবার পদক্ষেপ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার।

Latest News See More