দৈত্য বললেও হয়তো কম বলা হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে বৃহত্তম ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। আর্জেন্টিনার নিউকুইন প্রদেশে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া গেছে এই জীবাশ্ম। সম্প্রতি ক্রেটিয়াস রিসারচ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র। সেখানেই বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা দেন সদ্য আবিষ্কৃত এই ডাইনোসরের সম্পর্কে।
মূলত জীবাশ্ম হিসাবে এই ডাইনোসরের ঊরুর হাড় খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তার উপর নির্ধারণ করেই বিজ্ঞানীদের অনুমান এই প্রাণীটির দৈর্ঘ্য ছিল ৪০ মিটার (১৩০ ফুট) আর উচ্চতা ছিল ২০ মিটার (৬৫ ফুট)। প্রায় ৭৭ টন ওজন ছিল এই দীর্ঘদেহী ডাইনোসরের। যা ১৪টি আফ্রিকান হাতির ওজনের থেকেও বেশি। এমনকি এতদিন পর্যন্ত সবথেকে ভারী ডাইনোসর হিসাবে পরিগণিত আর্জেন্টিনোসোরাসের থেকেও ৭ টন ভারী ছিল এই প্রাণীটি।
বিজ্ঞানীদের মতে এই দৈত্যাকার ডাইনোসরটি টাইটানোসর গোত্রের অন্তর্ভুক্ত, সেরোপড গ্রুপের সদস্য। এই গোত্রের প্রাণীগুলির দীর্ঘ ঘাড়ের সঙ্গে লম্বা লেজ এবং স্তম্ভের মতো পা ছিল প্রধান দৈহিক বৈশিষ্ট্য। দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলেই দেখা মিলত এই ডাইনোসরের। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস এই ডাইনোসরগুলি আসলে ছিল তৃণভোজী। ৯.৫ থেকে ১০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে রাজত্ব করত এই প্রাণীরা। ক্রাইটেসিয়াস-প্যালিওজিন ঘটনা অর্থাৎ পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুর সংঘর্ষের সময় সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় তারা।
গবেষণার সহ-লেখক আলেজান্দ্রো ওটারো জানান, টাইটানোসরাস, প্যাটাগোটাইটান, পুয়ের্টাসোরাস ইত্যাদি ডাইনোসরগুলিও অতীতে বিচরণ করত এই একই অঞ্চলে। যা একই আবহাওয়া এবং পরিবেশে বিভিন্ন প্রজাতির তৃণভোজী ডাইনোসরের সহাবস্থানের ধারণাকেই সমর্থন করে। তবে সদ্য আবিষ্কৃত এই জুরাসিক-সদস্যকে নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা দরকার বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। আর তার জন্য দরকার আরও বেশি জীবাশ্মের নমুনা খুঁজে পাওয়া...
Powered by Froala Editor