নাকের উপরে একটি বা দুটি পাকানো শিং, দেখলেই চেনা যায় প্রকৃতির অন্যতম বলবান প্রাণী গণ্ডারকে। তবে গণ্ডারদের বাঁচাতেই এবার তাদের সেই শিং কেটে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হল। চোরাশিকারীরা নয়, বরং প্রাণী সংরক্ষণ কর্মীদের হাতেই চলছে এই উদ্যোগ। করোনা অতিমারী পরবর্তী পরিস্থিতিতে ক্রমশ চোরাশিকারের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কিছু সংরক্ষিত বনভূমিতে কয়েক ডজন গণ্ডারের শিং কেটে নেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে ঘিরে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে বিতর্কও।
অক্টোবর মাস থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার পিলেন্সবার্গ ন্যাশানাল পার্ক, বোতসালানো গেম রিজার্ভ সহ বেশ কিছু সংরক্ষিত বনভূমিতে গণ্ডারের শিং অপসারনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। প্রথমে রাইনো-৯১১ নামের একটি সংগঠন এই কাজটি শুরু করে। পরবর্তীতে আরও বেশ কিছু প্রাণী সংরক্ষণ সংগঠন এগিয়ে আসে। এই প্রক্রিয়ার পক্ষে যুক্তি অত্যন্ত পরিষ্কার। চোরাশিকারীদের হাতে গণ্ডারের প্রাণনাশের একমাত্র কারণ তাদের শিং। বিশেষ করে এশিয়ার গোপন বাজারে এর দাম আকাশ ছোঁয়া। কোথাও কোথাও সোনা বা হীরের থেকেও বেশি। চিনের এক একটি অঞ্চলে গণ্ডারের শিং-এর গড় মূল্য ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। তবে তাদের শিং না থাকলে শিকারীদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
তবে ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতায় সরব হয়েছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এভাবে বলপূর্বক অঙ্গচ্ছেদ করে আদৌ কি সুরক্ষিত রাখা যাবে গণ্ডারদের? বিশেষ করে অরণ্যের পরিবেশে আরও নানা হিংস্র জন্তুর সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় গণ্ডারদের। সেখানে তাদের শিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। যদিও লকডাউনের পর ক্রমাগত বাড়তে থাকা চোরাশিকার আটকাতেই এই আপৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন সংরক্ষণ কর্মীরা। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তো বাদ দেওয়া শিং নতুন করে গজিয়েও উঠবে। বিশেষ প্রয়োজন না হলে তাদের আর বিরক্ত করা হবে না বলেই জানিয়েছেন রাইনো-৯১১ সংগঠনের কর্ণধার নিকো জ্যাকোবস। তবে আপাতত গণ্ডারদের বাঁচিয়ে রাখতেই এটুকু করতেই হচ্ছে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মহামারীর মধ্যেও সুখবর, দক্ষিণ আফ্রিকায় গণ্ডারের চোরাশিকার কমেছে এক-তৃতীয়াংশ