সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচারের রিপোর্টে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্টে পরিষ্কার, আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে ভয়াবহ সংকটে বন্যপ্রাণ। অস্ট্রেলিয়ার বীভৎস দাবানল প্রাণ কেড়েছে প্রায় তিনশো কোটিরও বেশি জীবজন্তুর। অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছে আরও অসংখ্য পশু।
অস্ট্রেলিয়ার শেষ গ্রীষ্মের ভয়াবহ দাবানল বিস্মিত করে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। বহু সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী, পাখি ছাড়াও মৃত্যু হয়েছিল মানুষেরও। গত জানুয়ারিতে, তীব্র ভয়াবহতার এই আবহে বিজ্ঞানীদের অনুমান ছিল প্রায় ১.২৫ বিলিয়ন পশুপাখির জীবন বিপন্ন হতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়াতেই শুধুমাত্র এই পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি ঘটতে পারে বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা।
কিন্তু বাস্তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বিপুল। জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ১১.৪৬ মিলিয়ন হেক্টর অঞ্চল ছারখার হয়ে গেছে দাবানলের প্রকোপে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণ হারানো পশুপাখির সংখ্যাটা আরও বেশি বই কম না। দাবানলের আঁচ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া পশুরাও হয়তো খাদ্য এবং আশ্রয়ের অভাবে বেশিদিন বাঁচতে পারেনি। তাছাড়া, মাছ কচ্ছপ এবং অন্যান্য ইনভার্টিব্রেটদের কথা ধরলে সংখ্যাটা আরওই বাড়বে।
এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ায় সবথেকে বেশি সাহায্য দরকার কোয়ালা এবং ওয়ালাবিদের। এছাড়াও মাছ, পাখি ইত্যাদি তো রয়েইছে। অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব ও দক্ষিণে জীবজন্তুদের কম করে ৩০ শতাংশ স্বাভাবিক বাসস্থান কমে গেছে। নিভে যাওয়া আগুনের আঁচেও মৃত্যুর সংখ্যাটা প্রায় ৪৪৫। অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্যপ্রাণীর পুনর্গঠনে মোটা অঙ্কের অর্থপ্রকল্প সামনে এনেছে। তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’দিন ছাড়া ছাড়া এই ভয়াবহ দাবানল আদতে আবহাওয়ারই ব্যপক রদবদলের প্রতিফলন।
Powered by Froala Editor