জেনারেল মোটরস এবং হার্লে-ডেভিডসন ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে আগেই। এবার সেই পথ ধরেই ভারত ছাড়তে চলেছে ফোর্ড মোটর কোম্পানি (Ford Motor Co.)। আজ দুপুরে কোম্পানির ভারতীয় শাখার বৈঠকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলোর একটি ফোর্ড। অথচ ভারতের বাজারে দীর্ঘদিন লড়াই করেও জায়গা করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ভারতে ব্যবসা বন্ধ করে দিলেও অন্তত ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির কর্তারা।
ভারতে ফোর্ডের দুটি কারখানাই বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে এই মাসের মধ্যে। তবে এখনই ভারতের বাজার সম্পূর্ণ ছেড়ে দিতে রাজি নয় কোম্পানি। আর তাই আমেরিকায় নির্মিত গাড়ি সরবরাহ করা হবে। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতিও আসলে সম্মানরক্ষার জন্যই বলে মনে করছেন অনেকে। ২৫ বছর আগে ভারতে ব্যবসা শুরু করে ফোর্ড মোটর কোম্পানি। এর মধ্যে ভারতের রাস্তার জন্য বিশেষ ধরনের গাড়ি তৈরির চেষ্টাও করেছে ফোর্ড। তবে কিছুতেই এদেশের ক্রেতাদের মন জয় করা সম্ভব হয়নি। এখনও অবধি ভারতের মোটর ব্যবসার মাত্র ২ শতাংশ ফোর্ডের দখলে। প্রথম কয়েক বছরের ধাক্কা সামলে খানিকটা লাভের আশা দেখতে শুরু করেছিল কোম্পানি। কিন্তু গত ১০ বছরে সেই সমীকরণটাও সম্পূর্ণ বদলে যায়। একটানা ১০ বছরের মিলিত লোকসানের অঙ্কটা দাঁড়ায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক কারণেই ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হল ফোর্ড।
ফোর্ডের মতো আন্তর্জাতিক কোম্পানির লোকসানের পিছনে গাড়ির দামকেই মূলত দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে জেনারেল মোটরস বা হার্লে ডেভিডসনের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ উঠেছে। ভারতের সবচেয়ে বড়ো হার্ডওয়্যার ব্যবসা মোটরগাড়ি। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই সাধারণত স্বল্প মূল্যের গাড়ি খোঁজেন। আর সেই চাহিদা পূরণের জন্য রয়েছে ভারতের বেশ কিছু কোম্পানিও। স্বাভাবিকভাবেই বহুজাতিক সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতায় পিছু হটছে। তার যেটুকু বিক্রি, সেটা মূলত ব্র্যান্ডের চাহিদার কারণেই। আর সেই চাহিদাটা আরও কিছুটা দাম বাড়লেও চাহিদা খুব একটা কমবে বলে মনে হয় না। আপাতত সেইটুকু সরবরাহ রাখতেই চাইছে ফোর্ডের মতো কোম্পানি।
Powered by Froala Editor