বন্ধ দোকানপাট, রাস্তাঘাট। নিজেদের প্রয়োজন মতো খাবার সরঞ্জাম নিয়ে দরজা বন্ধ করেছেন প্রত্যেকেই। প্রত্যেকের মনেই ভয়। কী জানি, কোত্থেকে ছড়িয়ে পড়বে কোভিড-১৯ ভাইরাস! আর এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতেই কাজ করে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে অন্যান্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষ। শুধু তাঁদের কথা বললেও তো সবটা বলা হয় না। যাদের সমস্ত জীবন কাটে রাস্তাতেই, তাঁদেরও তো অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। অথচ বন্ধ শহরে বেঁচে থাকার মতো খাবারেরও যে বড্ড অভাব। আর এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবে বেঁচে আছেন, তার কতটুকুই বা খোঁজ রাখি আমরা?
আরও পড়ুন
বাড়িতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বাজারে বিতরণ, উদ্যোগে ব্যারাকপুরের তরুণরা
এর মধ্যেই দেখা গেল অন্যরকম একটা ছবি। রাস্তায় ছড়িয়ে আছে খাবারের প্যাকেট। কারোর যদি প্রয়োজন পড়ে, এসে তুলে নিলেই হল। রাস্তার ধারে আশ্রয়হীন মানুষ হোক, বা স্বাস্থ্যকর্মী, অথবা কোনো জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী। খাবারের অভাব যেন কাউকেই না ছুঁতে পারে, এমনটাই চেয়েছেন সেখানকার মানুষ। তাই নিজেদের বাড়ির রান্না করা খাবারের কিছুটা প্যাকেটে মুড়ে নামিয়ে রেখে এসেছেন রাস্তায়।
পৃথিবীজুড়ে করোনার আতঙ্কের মধ্যেই এমন মন ভালো করা ছবি দেখা গেল তুর্কি দেশের রাজধানী ইস্তানবুল শহরে। ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সেই ভিডিও। অনেকে এমনও বলছেন, সঙ্গে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বন্দোবস্ত করলে আরও ভালো হত। কিন্তু এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে এমন মানবিকতার ছবিও কি বিরল নয়?
আরও পড়ুন
বিশ্বজুড়ে মেডিক্যাল পরিষেবা সহজলভ্য করতে ক্লাউড ওয়েবসাইট আলিবাবা-র
মহামারীর সতর্কতার মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকেই নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে চিন্তিত। ঘরের দরজা বন্ধ রেখে কতজনই বা আর ভাবছেন, পাশের মানুষগুলো কীভাবে বেঁচে আছেন? আসলে মহামারীর সময়েই তো মানুষের প্রকৃত মানবিক রূপ চেনা যায়। আত্মপ্রকাশ করে চূড়ান্ত স্বার্থপর মানসিকতা। আর এর মধ্যেই অন্যরকম গল্প বুনছেন ইস্তানবুলের মানুষ। ডাক পাঠাচ্ছেন হাতে হাত রেখে এই কঠিন সময় পেরিয়ে যাওয়ার। পৃথিবীর সমস্ত দেশেই যদি এমন মানবিকতার প্রকাশ ঘটে, মানব সভ্যতার ইতিহাসটা হয়তো তাহলে এক অন্য খাতে বয়ে যাবে।