পুজোর মুখে বন্যা উত্তরবঙ্গে, রেহাই নেই মুর্শিদাবাদ-হাওড়া-হুগলিরও

পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে গোটা বাংলায়। আর তার মধ্যেই ভাসছে উত্তরবঙ্গ। বিগত বেশ কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে বন্যার কবলে পড়েছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ। তারই রেশ এসে পড়েছে এই রাজ্যে। উত্তরের মালদা, মুর্শিদাবাদের একাধিক অঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যার পরিস্থিতি। কেবল উত্তরই নয়, হাওড়া ও হুগলির কিছু অংশও প্লাবিত হয়েছে। সবদিক থেকেই, তৈরি হয়েছে আশঙ্কার পরিস্থিতি।

কিন্তু কেন হল এই অবস্থা? পুজোর ঠিক আগেই নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্তের জেরে দেশের উত্তরে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর হয় যে, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ— এই দুটো রাজ্যেই বন্যার পরিবেশ তৈরি হয়। নদী উপচে ভেসে যায় গ্রামগুলো। আর তার রেশ এসে পড়ে মালদা, মুর্শিদাবাদে। গঙ্গা, ফুলহার, মহানন্দার জল রীতিমত ফুঁসছে। বহু আগেই বিপদসীমা অতিক্রম করে ফেলেছে নদীগুলি। গত এক-দুইদিন ভারী বৃষ্টি না হলেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। বরং আরও অবনতি হচ্ছে।

শুধু গঙ্গা বা মহানন্দা নয়, ফুঁসছে দামোদরও। সবকিছুর সঙ্গে, জল ছাড়তে শুরু করেছে ড্যামগুলো। সোমবার রাত থেকে জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। পরের দিন সেই মাত্রা বেড়ে যায় প্রায় ১ লক্ষ কিউসেকে। ফলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, হুগলির পুরশুড়া সহ বহু এলাকায় তৈরি হয় বন্যার পরিস্থিতি। এছাড়াও, মঙ্গলবার থেকে জল ছাড়া শুরু করে ফরাক্কা ব্যারেজ। ফলে বিপদের মাত্রা আরও বেড়ে চলেছে। বৃষ্টি কমলেও, বিপদ কমার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।

পুজোর শুরুতেই এমন বিপর্যয়ে বিপদে পড়েছেন বাসিন্দারা। উত্তরবঙ্গে প্রায় দেড় লক্ষ পরিবার জলবন্দি। অনেক গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে গেছে। নদীর বুকে ভেসে গেছে বহু বাড়ি, জমি। জাতীয় সড়কগুলিও জলমগ্ন। এখন পুজো দূরের কথা, ঘরবাড়ি এবং প্রাণ বাঁচানোর জন্য হন্যে হয়ে পড়েছেন এই মানুষগুলো। বৃষ্টি কমলেও, পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেই আশাতেই দিন গুনছেন তাঁরা।