Powered by Froala Editor
ফিরে দেখা ২০২০ : যেসব অবিস্মরণীয় রেকর্ডের সাক্ষী রইল ক্রীড়াজগৎ
১/১৫
২০২০ নিঃসন্দেহে একটি অভিশপ্ত বছর। এখনও পর্যন্ত ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা মহামারী। শুধু জনজীবনই নয়, ক্রীড়ামহলেও যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে মহামারীর আবহ। পিছিয়ে গিয়েছিল অলিম্পিক। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস— সবকিছুই। সেই ধাক্কা কাটিয়ে জুলাই-আগস্ট থেকে আবার মাঠে নেমেছিলেন তারকারা। দীর্ঘ বিরতির পরেও কিছু অনবদ্য রেকর্ড তৈরি করলেন তারা। বছরশেষে, ফিরে দেখা ক্রীড়াজগতের সেসব রেকর্ডই...
২/১৫
মাতভেই মিচকোভ জানুয়ারিতে আইস হকি টুর্নামেন্টের ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে সেরার মুকুট মাথায় চড়ায় রাশিয়া। এই প্রতিযোগিতায় একা ৯টি গোল করে নজর কাড়েন মাতভেই মিচকোভ। ফাইনালে তাঁর অনবদ্য দুটি গোলের জন্য এনএইচএল স্কাউটের বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন মাতভেই।
৩/১৫
ম্যাগনাস কার্লসেন বিশ্বনাথন আনন্দের পর দাবার ছকে বাজিমাত করেছিলেন ম্যাগনাস কার্লসেন। এবার নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন তিনি। ১১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকলেন কার্লসেন। রাশিয়ান তারকা সার্জেই টিভিয়াকোভের করা ১১০ ম্যাচের রেকর্ডকেও ধূলিস্যাৎ করে শীর্ষে পৌঁছালেন তিনি...
৪/১৫
ক্রিসচাইন সিনক্লেয়ার চলতি বছরেই ফুটবলের জগতে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করেন কানাডিয়ান মহিলা ফুটবলার ক্রিসচাইন সিনক্লেয়ার। মহিলা এবং পুরুষ উভয় বিভাগেই বর্তমানে আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোলসংখ্যার নিরিখে শীর্ষে পৌঁছালেন কানাডিয়ান ক্যাপটেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাবি ওয়ামব্যাচকে টপকে তাঁর গোলসংখ্যা এখনও ১৮৪। সদ্য ববি রোশেনফিল্ড পুরস্কারও জুড়ল তাঁর মুকুটেই। পরিসংখ্যান বলছে মেসি, রোনাল্ডো এমনকি পেলের থেকেও বহু বহু অংশে এগিয়ে রয়েছেন এই মহিলা তারকা।
৫/১৫
টেডি রিনার জুডোর জগতে এক কিংবদন্তির নাম টেডি রিনার। সাম্প্রতিক সময়ে জুডোর একমেবাদ্বিতীয়ম চ্যাম্পিয়ন হিসাবে তাঁকেই ধরে নেওয়া যায়। তবে ১০ বছর টানা একটিও ম্যাচ না হারার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই প্রথম জয়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকলেন টেডি রিনার। তাঁর এই ঐতিহাসিক হারের পর অবাক গোটা বিশ্বও। অন্যদিকে এই ফ্রেঞ্চ তারকাকে হারিয়ে যেন নতুন যুগের সূত্রপাত করলেন জাপানের কাগেইরা কোকোরো। এর আগে ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টেডি হেরেছিলেন জাপানি প্রতিদ্বন্দ্বী তাকাহাসি কাজুহিকোর কাছে।
৬/১৫
ক্রিসচিয়ান ওঙ্গারে বাতিল হয়ে গেছে টোকিও অলিম্পিক। তবুও বাছাই পর্বে যোগ্যতা অর্জন করেই নজর কেড়েছেন কেনিয়ার ‘ঘেটো গার্ল’ ক্রিসচিয়ান ওঙ্গারে। বক্সিং-কে আঁকড়ে তাঁর এতটা পথ অতিক্রম করে আসাই যেন নতুন করে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে সমস্ত উদীয়মান খেলোয়াড়দের। ২৭ বছর বয়সী ওঙ্গারে মা হয়েছিলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে। তবুও সমাজের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে এসে এই লড়াই— তা তো মুখের কথা নয়!
৭/১৫
মন্ডো ডুপ্লানটিস আউটডোর পোল ভল্টে এতদিন অবধি বিশ্বরেকর্ড ছিল ইউক্রেনের তারকা সারজেই বুবকা-র। ১৯৯৪ সালে ৬.১৪ মিটার উচ্চতার জাম্পের সেই ট্রেডমার্ককে চলতি বছরে ভাঙলেন সুইডিস ভোল্টার মন্ডো ডুপ্লানটিস। রোমে আয়োজিত ডায়মন্ড লিগে ৬.১৫ মিটারের নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরি করলেন তিনি।
৮/১৫
রাফায়েল নাদাল প্যারিসে অটাম ফেঞ্চ ওপেন টাইটেলের ফাইনালে নোভাক জকোভিচকে ঐতিহাসিক ৬-০, ৬-২, ৭-৫ সেটে হারালেন নাদাল। এই জয়ের পর তাঁর মোট গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ২০-তে। ‘কিং অফ ক্লে’ স্পর্শ করলেন কিংবদন্তি রজার ফেডরারের রেকর্ড। এই দুই তারকার থেকে ৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম কম পেয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিকারি বর্তমানে জকোভিচ।
৯/১৫
বিরাট কোহলি ঈশ্বর স্পর্শ বললেই চলে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ান-ডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নেমে দ্রুততম ১২ হাজার রানের রেকর্ড গড়লেন কোহলি। এতদিন পর্যন্ত এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন ক্রিকেটের ‘ঈশ্বর’ সচিন তেন্ডুলকার। ৩০০ ইনিংস খেলে গড়েছিলেন ১২ হাজার রানের রেকর্ড। তাঁর থেকেও ৫৮ ইনিংস কম খেলে কোহলি ছুঁয়ে ফেললেন এই বিপুল রানের মাইলস্টোন। এখন প্রশ্ন ৩২ বছর বয়সী ভারতীয় অধিনায়ক সচিনের ১৮ হাজার রানের রেকর্ডকেও কি ছাপিয়ে যাবেন? পরিসংখ্যান তেমনটাই আভাস দিচ্ছে আগে থেকে।
১০/১৫
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ডিসেম্বরের শুরুতেই প্রফেশনাল কেরিয়ারে ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচ মিলিয়ে ৭৫০ গোলের মাইলস্টোন স্পর্শ করলেন পর্তুগিজ তারকা। রোনাল্ডোর বর্তমান সংগ্রহ ৭৫৬টি গোল। আর মাত্র ১৩ বার জালে বল জড়ালেই তিনি স্পর্শ করবেন ফুটবল সম্রাট পেলেকে। তবে এখনও অবধি মোট গোল সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে রয়েছেন চেগ-অস্ট্রিয়ান স্ট্রাইকার জোসেফ বাইকান (৮০৫ গোল)। পরবর্তী মরশুমের মধ্যেই ৮০০ গোলের মাইলস্টোন স্পর্শ করাই এখন অন্যতম লক্ষ্য ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর।
১১/১৫
লিওনেল মেসি এককভাবে দলের ভারবহন হয়তো একেই বলে। চলতি বছরের শেষে যেমন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রোনাল্ডো স্পর্শ করলেন ৭৫০ গোলের রেকর্ড, তেমন পিছিয়ে থাকলেন না মেসিও। ক্লাবের হয়ে ৬৪৪ গোল করে পেলেকে স্পর্শ করলেন বার্সেলোনার প্রাণ-ভোমরা। কোনো একটি ক্লাবের জার্সি গায়ে এটাই ফুটবলজগতে সর্বোচ্চ গোল। এর আগে স্যান্টোসের জার্সি গায়ে পেলের ৬৪৩ গোলের রেকর্ডই স্বীকৃতি পেত। সেই ইতিহাস মুছেই নতুন করে সাড়া ফেললেন এলএম১০।
১২/১৫
হালভোর এনগার গ্র্যানেরুড প্রথম কোনো নওয়েজিয়ান স্কি জাম্পার হিসাবে ৫টি বিশ্বকাপ জয় করলেন হালভোর এনগার গ্র্যানেরুড। শুধু তাই নয়, পরপর ৫টি বিশ্বকাপ জয়ের এই নতুন বিশ্বরেকর্ডের পালক জুড়ল তাঁর মাথায়। স্কিয়ের জগতে এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর থেকে একটি বিশ্বকাপ বেশি জিতে শীর্ষে রয়েছেন কোবেয়াসি রিয়োয়িউ।
১৩/১৫
সর্বনিম্ন স্কোরের পরেও ভারতের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই বড়ো ধাক্কা খেয়েছিল বিরাট-বাহিনী। প্রথম ইনিংসে লিড থাকা সত্ত্বেও তুরুপের তাসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে ধসে যায় ভারতীয় ব্যাটিং লাইন। সব মিলিয়ে মাত্র ৩৬ রান সংগ্রহ করে ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে এমন লজ্জাজনক হারের সম্মুখীন শেষ কবে হতে হয়েছিল ভারতকে, তা বলা দুষ্কর। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ভারতের করা সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড হয়ে রয়ে গেল এই স্কোর। কিন্তু এই হারের পরেও দুরন্ত ফর্মে ফিরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম বক্সিং ডে টেস্ট জেতার রেকর্ড তৈরি করল ভারত।
১৪/১৫
জেহান দারুভালা প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মিক শুমাখার, ড্যানিয়াল টিকটামের মতো রেসাররা। তবুও তাঁদের পিছনে ফেলেই প্রথম ভারতীয় হিসাবে বাহারিন ফর্মুলা-২ রেসিংয়ে জয় আনলেন জেহার দারুভালা। বয়স মাত্র ২২ বছর। এখনও পড়ে রয়েছে বিশাল কেরিয়ার। সাখির গ্র্যান্ড প্রিক্স জিতে এখন ভারতকে ফর্মুলা ওয়ান জেতানোর স্বপ্নই দেখাচ্ছেন দারুভালা। সূত্রপাত করছেন নতুন ইতিহাসের।
১৫/১৫
নরওয়ে জাতীয় হ্যান্ডবল দল ইউরোপিয়ান হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপে এ-বছরও ঝলকে উঠল নরওয়ের জাতীয় মহিলা দল। অষ্টমবারের জন্য কাপ তুলে বিশ্বরেকর্ড করল নরওয়ে। ২০০৭ সাল পর্যন্ত একটিও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে পারেনি নরওয়ের মহিলা দল। তবে তারপরেই যেন ফিনিক্সের মতো উত্থান হয় রেড-ব্রিগেডের। শেষ ১২টির মধ্যে ৮টিতেই শেষ হাসি হাসলেন নরওয়ের মহিলারা। তৈরি করলেন নতুন ট্রেডমার্ক।