১৯১৬ সালে শুরু হয়েছিল পথ চলা। তারপর পেরিয়ে গেছে ১০৫ বছর। এবার পরিবর্তন এল অচলায়তনে। জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর পদে এই প্রথম নিয়োজিত হলেন কোনো মহিলা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশিক্ষণ বিভাগের অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিটি অফ দ্য ক্যাবিনেট থেকে জেডএসআই-এর নতুন অধিকর্তা হিসাবে ঘোষণা করা হয় ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। আগামী সপ্তাহ থেকেই অধিকর্তার দায়িত্ব সামলাবেন তিনি।
১৯৯৭ সালে জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় জুনিয়র সায়েন্টিস্ট হিসাবে যুক্ত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের এই প্রাক্তনী। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ গবেষক হিসাবে তাঁর কাজ শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানেই। সব মিলিয়ে ১৫টি বৈজ্ঞানিক প্রকল্প ও ৯৫টি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছেন ধৃতি। শতাধিক প্রাণীর জিনগত বৈশিষ্ট শনাক্ত করার পিছনে অনস্বীকার্য অবদান রয়েছে তাঁর। তাছাড়াও সংগ্রহে থাকা ৪০ লক্ষ জীবের নমুনা ডিজিটালাইজ করার উদ্যোগ নিয়েছে জেডএসআই। এই বিপুল কার্যক্রমেরও নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৫১ বছর বয়সী বাঙালি অধ্যাপিকা।
তবে আজ থেকে ৭০ বছর আগেও গবেষণার ক্ষেত্রে সামগ্রিক ছবিটা ছিল পুরো ভিন্ন। ১৯৪৯ সালে প্রথম মহিলা গবেষক হিসাবে জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় সুযোগ পেয়েছিলেন মীরা মানসুখানি। তারপর একটু একটু করে ভেঙেছে লিঙ্গ বৈষম্যের বেড়াজাল। ৭২ বছর আগে মীরা মানসুখানি যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছিলেন, তারই বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ হল ধৃতি’র হাত ধরে।
তবে এখনও যে লিঙ্গ বৈষম্য সম্পূর্ণভাবে মুছে যায়নি জেডএসআই-এর অভ্যন্তর থেকে, তারই ইঙ্গিত দিচ্ছেন বাঙালি অধ্যাপিকা। আর সেই কারণেই ক্রমশ মহিলা ক্ষমতায়নে জোর দিচ্ছেন তিনি। বছর পাঁচেক আগে, প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষে প্রকাশিত হয়েছিল জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ১০০ জন মহিলা বিজ্ঞানীর অবদানের একটি সম্পূর্ণ নথি। সেই কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন ধৃতি। ক্ষমতায় আসার পরেও সেই লক্ষ্যেই অবিচল তিনি। ধৃতি জানাচ্ছেন, ২০ শতাংশ সাম্প্রতিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ কৃতিত্ব রয়েছে মহিলা গবেষকদের। মহিলা ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত হলে, এই শতকরা হার আরও বাড়বে বলেই আশাবাদী তিনি।
আরও পড়ুন
মহিলাদের পোশাক, পুরুষদের চাহনি
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
এ যেন অঘটনেরও অঘটন, প্রথমবার অলিম্পিক সেমিফাইনালে ভারতের মহিলা হকি দল