কিছুদিন আগেও এদেশে রূপান্তরকামী ও সমকামী মানুষদের দেখা হত খাটো চোখে। এখনও হয় বৈকি। তবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের দীর্ঘ সংগ্রাম অবশেষে আইনি স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। কিন্তু কোনো রূপান্তরকামী মানুষই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সাধারণ মানুষের দাবি বিধানসভায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, এমনটা দেখতে অভ্যস্ত নই আমরা একেবারেই। তবে এবার সংসদীয় রাজনীতির মঞ্চেও প্রতিনিধি হিসাবে উঠে এলেন কেরালার অনন্যা কুমারী অ্যালেক্স। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ভেঙ্গারা কেন্দ্র থেকে। কেরালা বিধানসভায় তিনিই প্রথম রূপান্তরকামী প্রতিদ্বন্দ্বী।
এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক সোস্যাল জাস্টিস পার্টির সবচেয়ে বড়ো মুখ অনন্যা কুমারী। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের প্রার্থী পিকে কুনহালিকুট্টি। বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে আছেন পি জিজি। দুই পোড় খাওয়া রাজনীতিকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অনন্যা কুমারী আদৌ জিততে পারবেন কিনা, বলা শক্ত। তবে এই লড়াই তো ভোটের অঙ্কে জয়লাভের নয়। এটা আসলে সমাজে রূপান্তরকামী মানুষের স্বীকৃতির লড়াই। এভাবেই দেখতে চাইছেন তিনি।
এর আগে কেরালার প্রথম রূপান্তরকামী রেডিও জকি হিসাবেও রেকর্ড তৈরি করেছিলেন অনন্যা কুমারী। আর এবারে বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর মতে, মানুষের বোঝা উচিৎ যে অন্যান্য পুরুষ-মহিলাদের মতো রূপান্তরকামীরাও ভালো নেতা হতে পারেন। তাঁদের যোগ্যতা কোনো অংশে কম নয়। পাশাপাশি অন্যান্য রূপান্তরকামী মানুষদেরও সমাজের প্রতিটা স্তরে এগিয়ে আসতে বলেছেন তিনি। তাঁরা নিজেরা এগিয়ে না এলে কেউ জায়গা তৈরি করে দিতে পারবে না। তাই প্রত্যেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে চান অনন্যা কুমারী। অন্যদিকে তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বীও এই বিষয়ে অনন্যার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আইইউএমএল প্রার্থী পিকে কুনহালিকুট্টি বলেছেন, নির্বাচনের লড়াই হবে ভোটের বাক্সে। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ভীষণ প্রয়োজনীয়। সেখানে অনন্যা কুমারীর এই এগিয়ে আসা সত্যিই স্যালুট করার মতো। এভাবেই আবারও একবার ইতিহাস তৈরি করলেন অনন্যা কুমারী অ্যালেক্স।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুধুমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য মাদ্রাসা, দিনবদলের ইঙ্গিত পাকিস্তানে