আরও একবার সংবাদ মাধ্যমের শীর্ষে উঠে এল প্রতিবেশী গ্রহের নাম। বলা চলে, মঙ্গলের রহস্য উন্মোচনে একটি ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করল বিজ্ঞান। এই প্রথমবার মঙ্গলগ্রহে জলীয় বাষ্পের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। আর এই আবিষ্কারই যেন মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে এনে দিচ্ছে নতুন মাত্রা।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং রাশিয়ার রসকসমসের যৌথ উদ্যোগে পাঠানো অর্বাইটার ‘এক্সোমার্স ট্রেস গ্যাস’ সম্প্রতি সনাক্ত করেছে এই জলীয় বাষ্পকে। নেপথ্যে ‘নাদির’ এবং ‘ওকাল্টেশন’ নামক দুটি যন্ত্র। এই দুট যন্ত্রের বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে গবেষকরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের একেবারে বাইরের দিকে অত্যন্ত ক্ষীণ একটি জলীয় বাষ্পের স্তর।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও জলের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল মঙ্গলে। তবে তার মূলত জমে আছে বরফের আকারে মাটির নিচে। কিন্তু মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে জলের অস্তিত্ব এই প্রথম চিহ্নিত করলেন বিজ্ঞানীরা। আর এই জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, মঙ্গলের গর্ভে কোথাও জমে আছে তরল জল। যা ক্রমে বাষ্পীভূত হয়ে বেরিয়ে আসছে পাথুরে মাটির ফাটল দিয়ে। আর জলের অস্তিত্ব মানে সেখানে থাকলেও থাকতে পারে প্রাণের অস্তিত্ব।
তবে শুধু জলের অস্তিত্বই নয়, বরং সেই বাষ্পের মধ্যে উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে প্রোটিয়াম এবং ডিউটেরিয়াম— হাইড্রোজেনের উভয় আইসোটোপেরই। এই দুই আইসোটোপের অনুপাতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে পরবর্তীকালে রহস্য উন্মোচিত হতে পারে মঙ্গলের বিবর্তনের ইতিহাসেরও। কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলের বুক থেকে জলের হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত ডিউটেরিয়াম অণুর সৃষ্টি।
২০১৬ সালের মার্চ মাসে এই অর্বাইটার পাঠানো হয়েছিল মঙ্গলে। এর ঠিক ৮ মাস পর নভেম্বর মাসে মঙ্গলের কক্ষপথে সফল প্রতিস্থাপন হয় ‘এক্সোমার্স’-এর। তারপর কেটে গেছে পাঁচ বছর। বেশ কিছু ছোটো-খাটো আবিষ্কারের হদিশ দিলেও, কোনো বড়ো রহস্যভেদ এতদিন করতে পারেনি এই অর্বাইটার। তবে এবার এই নতুন আবিষ্কার খুলে দিল এক নতুন দিগন্ত। সেই সঙ্গে বিস্তৃত হল বিতর্কের ক্ষেত্রও…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মঙ্গলে হেলিকপ্টার ওড়াবেন বাঙালি-সহ তিন ভারতীয়, ইতিহাসে প্রথম