প্রথমবার সুপারনোভা বিস্ফোরণের সাক্ষী বিজ্ঞানীরা, প্রকাশিত ভিডিও

সুপারনোভা (Supernova), শব্দটির সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত। কোনো নক্ষত্র ধ্বংসের সময় যে বিস্ফোরণ ঘটে, তাকেই বলে সুপারনোভা। কিন্তু ঠিক কেমনভাবে ঘটে এই বিস্ফোরণ? সত্যি বলতে কী, এই বিষয়ে এতদিন বিজ্ঞানীদেরও সম্যক ধারণা ছিল না। এই প্রথম বিজ্ঞানীরা প্রত্যক্ষ করলেন সেই ঘটনা। আমেরিকার দুই বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় নর্দার্ন ইউনভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এই দৃশ্য দেখতেই জড়ো হয়েছিলেন হাওয়াই দ্বীপের ডব্লিউ এম কিক অবজার্ভেটরিতে। অবশেষে পুরো ঘটনার বিশ্লেষণ সহ একটি টাইমল্যাপস ভিডিও প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা।

পৃথিবী থেকে প্রায় ১২ কোটি আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে ছায়াপথ এনজিসি ৫৭৩১। সেখানেই একটি নক্ষত্র বিস্ফোরণে ফেটে পড়ল। আসলে ১২ কোটি বছর আগেই ঘটে গিয়েছে সেই বিস্ফোরণ। তবে তার আলো পৃথিবীতে এসে পৌঁছাল এতদিনে। আয়তনে নক্ষত্রটি সূর্যের প্রায় ১০ গুণ। বিজ্ঞানীরা এই আয়তনের নক্ষত্রদের বলে থাকেন সুপার জায়েন্ট। এতদিন ধারণা ছিল, সুপারজায়েন্ট নক্ষত্ররা সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটায় না। তারা খুব ধীরে ধীরে সমস্ত শক্তি হারিয়ে মিলিয়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক এই পর্যবেক্ষণ সেই ধারণা বদলে দিল।


সুপারনোভা বিস্ফোরণ তো ঘটলই, এবং তা ঘটল বেশ দ্রুত। মাত্র ১৩০ দিনের মধ্যেই নক্ষত্রটি বিস্ফোরণে ফেটে পড়ল। আর বিশেষ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মনিটরের সামনে বসে এই ১৩০ দিন ধরে প্রতিটা ধাপ পর্যবেক্ষণ করলেন বিজ্ঞানীরা। এই ধরনের বিস্ফোরণের পর সাধারণত নিউট্রন স্টার তৈরি হয়। কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি ব্ল্যাক-হোলেরও জন্ম হয়। তবে এক্ষেত্রে নিউট্রন স্টারই তৈরি হয়েছে। সেই নিউট্রন স্টারটিও পরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা।

মহাবিশ্বের এক অংশ থেকে অন্য অংশে শক্তি ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী এই সুপারনোভা বিস্ফোরণ। পৃথিবীর বুকেও যাবতীয় পদার্থের জন্ম হয়েছে কোনো না কোনো সুপারনোভা বিস্ফোরণের ভিতর দিয়েই। অথচ এমন একটা ঘটনা সম্বন্ধে কোনো প্রত্যক্ষ ধারণাই ছিল না এতদিন। এই গবেষণা সেই অজানা দিকেই আলো ফেলতে পারবে। আগামীদিনে মহাজগতের আরও নতুন রহস্য হয়তো জানা যাবে এই পর্যবেক্ষণ থেকেই। অন্তত তেমনটাই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।

Powered by Froala Editor