একটা ছোট্ট শাবকের উচ্চতাই হয় প্রায় ৬ ফুট। সাধারণ মানুষের থেকে বেশি। আর প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উচ্চতা দাঁড়ায় ১৯ ফুট পর্যন্ত। কথা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা প্রাণী জিরাফের সম্পর্কে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন এমন দুটি জিরাফ যাদের উচ্চতা মাত্র ৯ ফুট। অথচ দুটি প্রাণীই প্রাপ্তবয়স্ক। প্রথমবারের জন্য এমন খর্বকায় জিরাফ নজরে এল বিজ্ঞানীদের। যা ফলে তাদের নিয়ে রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে নেট দুনিয়ায়।
উগান্ডায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণকারীরা একটি সার্ভে চলাকালীন সনাক্ত করে জিরাফ দুটিকে। তার মধ্যে একটি নুবিয়ান এবং অন্যটি অ্যাঙ্গোলান প্রজাতির। অ্যাঙ্গোলান প্রজাতির জিরাফটির উচ্চতা মাত্র সাড়ে আট ফুট বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। তাঁদের মতে এক বিশেষ জিনগত সমস্যার কারণেই হাড়ের বৃদ্ধি প্রভাবিত হয় প্রাণী দুটির। স্কেলেটন ডিসপালসিয়া নামের এই রোগই দায়ি জিরাফগুলির খর্বাকৃতির জন্য।
মানুষ ছাড়াও প্রজননজনিত কারণে বামনত্ব দেখা যায় পোষ্য এবং বন্দি প্রাণীদের ক্ষেত্রে। তবে বন্যপ্রাণীদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা একেবারেই বিরল। আর জিরাফের ক্ষেত্রে এই উদাহরণ প্রথমবারের জন্য দেখলেন বিজ্ঞানীরা।
জিরাফ কনসারভেশন ফাউন্ডেশন এবং স্মিথসোনিয়ান কনসার্ভেশন বায়োলজি ইনস্টিটিউটের অনুসন্ধানকারী গবেষকরা জিরাফ দুটির নামকরণ করেছেন জিমিল এবং নাইজেল। বছর পাঁচেক আগে জিমিল নামে পরিচিত নুবিয়ান জিরাফকে উগান্ডার মার্চিসন জাতীয় উদ্যানে প্রথম চিহ্নিত করেছিলেন। তখনও অবশ্য জিমিল শাবক অবস্থায়। তবে তার ঘাড় এবং পায়ের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অসংগতি চোখে পড়েছিল বিজ্ঞানীদের। ফলে এর চরিত্রের পিছনে কারণ যে বামনত্ব, তা বুঝতে পারেননি গবেষকরা। ২০২০-র জুলাই মাসে তোলা জিমিলের সর্বশেষ ছবিই রহস্যোদ্ঘাটন করে।
ডিসপালসিয়া আক্রান্ত প্রাণীদের মধ্যে বেঁচে থাকার হার অত্যন্ত কম বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই দুটি জিরাফের ক্ষেত্রে ঘটনাটি একটু অন্যরকমই। সংকটকালীন বয়স অনেক আগেই তারা পেরিয়ে এসেছে বলে আশ্বস্থ করেছেন তাঁরা। যদিও খর্বাকায় হওয়ার কারণে এই দুই জিরাফের গতিই অনেকটা সীমিত। ফলে অন্যান্য হিংস্র শিকারি প্রাণীদের উপস্থিতি, ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে তাদের টিকে থাকার লড়াই...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
তিমির পূর্বপুরুষ? জুরাসিক যুগের সামুদ্রিক প্রাণীর হদিশ দিল জীবাশ্ম