ভারতীয় সমাজ তো বটেই, লিঙ্গ বৈষম্য ছড়িয়ে রয়েছে কর্মক্ষেত্রের জগৎজুড়েও। আর মহিলাদের থেকেও আরও বেশি করে এই বৈষম্যের শিকার তৃতীয় লিঙ্গ এবং রূপান্তরকামী (Transgenders) মানুষরা। প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌনতার মানুষদের ভারত সরকার স্বীকৃতি দিলেও, সার্বিকভাবে তাঁদের প্রশাসনিক স্তরের কর্মক্ষেত্রে জায়গা করে দিতে পেরেছে কি? কেন্দ্র তেমন কোনো উদ্যোগ না নিলেও, এবার রূপান্তরকামীদের প্রশাসনিক বিভাগে কাজ করার সুযোগ করে দিল কর্ণাটক সরকার (Karnataka Government)। এই প্রথমবার রাজ্য পুলিশের (Police Department) দপ্তরে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় দরজা খুলে দেওয়া হল ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থীদের জন্য।
সম্প্রতি, সিভিল সার্ভিসেস আইনের বদল আনল কর্ণাটক সরকার। এবার থেকে রাজ্য পুলিশের পরীক্ষায় রূপান্তরকামী ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের আবেদন গ্রহণ করা হবে বলেই জানাল কর্ণাটক। পাশাপাশি তাঁদের জন্য পৃথকভাবে বরাদ্দ হল ১ শতাংশ চাকরি পদ বরাদ্দ করল দক্ষিণের রাজ্যটি।
কর্ণাটক সরকারের সাম্প্রতিক বিবৃতি অনুযায়ী, স্টেট রিজার্ভ পুলিশে ৪টি সাব-ইন্সপেক্টর, ৩টি ক্রাইম অফিসার, ৫টি পুলিশ সুপার, এবং ১টি স্পেশাল রিজার্ভ সাব-ইন্সপেক্টরের পদ সংরক্ষিত করা হয়েছে তৃতীয় লিঙ্গ ও রূপান্তরকামী ব্যক্তিদের জন্য। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে এই পদগুলির জন্য আবেদন করতে পারবেন তাঁরা। তাছাড়াও পরবর্তীকালে রূপান্তরকামী ব্যক্তিদের নিয়ে রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে কর্ণাটক সরকারের। নতুন বিধিমালায় উল্লেখিত হয়েছে, পুলিশের পদে আবেদনের জন্য ট্রান্সপ্রার্থীদের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে বিশেষ শংসাপত্র সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে লিঙ্গ পরিচয়ের সার্টিফিকেট।
এর আগে এই একই উদ্যোগ নিয়েছিল ছত্তিশগড় এবং ওড়িশা। মার্চের শুরুতেই ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশ নিয়োগ করেছিল ১৩ জন ট্রান্সজেন্ডার কনস্টেবল। তবে উচ্চপদস্থ পুলিশকর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়ায় এক অনন্য নজির গড়ল কর্ণাটক। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট ট্রান্স-সম্প্রদায়কে পৃথক লিঙ্গগোষ্ঠীর স্বীকৃতি দেয়। জানায়, সংবিধানে লিখিত মৌল অধিকারগুলির ওপর বিশেষাধিকার আছে তাঁদেরও। কিন্তু তারপরেও তাঁদের সেই ন্যায্য সম্মান দিতে ব্যর্থ ভারতের প্রশাসন। দেরিতে হলেও যেন এবার সেই সাম্যের দিকেই এগোচ্ছে ভারতের সমাজ…
আরও পড়ুন
দেশের দ্বিতীয় রূপান্তরকামী হিসাবে পদ্মশ্রী পেলেন কর্ণাটকের যোগাপ্পা নৃত্যশিল্পী
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
৪৮ বছর দাম্পত্যজীবন কাটিয়ে, বৃদ্ধাবস্থায় নিজেকে রূপান্তরকামী ঘোষণা ব্রিটিশ ব্যক্তির